দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের কর্মকাণ্ডের জন্য ক্ষমা চেয়ে বিশ্বব্যাপী পরিচিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী তমিচি মুরায়ামা আর নেই। ১০১ বছর বয়সে শুক্রবার সকালে জন্মস্থান ওইতা শহরের হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। খবর দিয়েছে এএফপি।
তমিচি মুরায়ামা ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত জাপানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ১৯৯৫ সালে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের অপরাধের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন, যা পরবর্তীতে জাপানের যুদ্ধ-সংক্রান্ত ক্ষমাপ্রার্থনার এক মানদণ্ড হিসেবে বিবেচিত হয়। মুরায়ামা জাপানের সমাজতান্ত্রিক দলের নেতা ছিলেন এবং তার নেতৃত্বাধীন জোট সরকারে লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টিও অংশগ্রহণ করেছিল। এই ঘটনা জাপানের রাজনৈতিক ভূ-দৃশ্যে বিশাল পরিবর্তন আনে।
মুরায়ামা ১৯৪৪ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় বাধ্যতামূলকভাবে জাপানি সামরিক বাহিনীতে যোগ দেন। তিনি যুদ্ধকালে ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা স্মরণ করে বলেছেন, “যুদ্ধের শেষ দিকে খাদ্যের অভাব ছিল তীব্র, অস্ত্রও প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছিল। আমাদের হাতে বাঁশের তৈরি অস্ত্র দেয়া হয়েছিল। তখন মনে হয়েছিল, এ অবস্থায় যুদ্ধ চালানো অসম্ভব।”
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ১৯৯৫ সালের আগস্টে, জাপানের আত্মসমর্পণের ৫০ বছর পূর্তির দিনে, মুরায়ামা একটি ঐতিহাসিক ভাষণ দেন। তিনি বলেন, জাপান তার ঔপনিবেশিক শাসন এবং আগ্রাসনের মাধ্যমে অনেক দেশের, বিশেষ করে এশিয়ার বিভিন্ন দেশের মানুষের কাছে বিরাট ক্ষতি এবং দুঃখের কারণ হয়েছে। আমি আশা করি, ভবিষ্যতে এমন ভুল আর হবে না। আমি বিনীতভাবে এই ঐতিহাসিক সত্যগুলো স্বীকার করছি, গভীর অনুতাপ প্রকাশ করছি এবং আন্তরিকভাবে ক্ষমা চাইছি।
এরপর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ৬০তম এবং ৭০তম বার্ষিকীতে জাপানের অন্যান্য প্রধানমন্ত্রীরাও ‘গভীর অনুতাপ’ ও ‘আন্তরিক ক্ষমা’ শব্দগুলো ব্যবহার করেন।