পরকীয়ার জেরে স্বামীকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্ত্রী হ্যাপি আক্তার ও তার প্রেমিক রুবেল মিয়ার বিরুদ্ধে। হত্যার বিষয়টি গোপন রাখার চেষ্টা করলেও নিহতের সাত বছর বয়সী কন্যা লিমা ঘটনাটি ফাঁস করে দেয়।
বুধবার (২২ অক্টোবর) বিকেলে গাইবান্ধার সদর উপজেলার কূপতলা ইউনিয়নের স্কুলের বাজার এলাকা থেকে ইকবাল হোসেনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় অভিযুক্ত স্ত্রী হ্যাপি আক্তারকে আটক করা হয়েছে।
পরিবারের সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১৫ বছর আগে ইকবালের সঙ্গে হ্যাপির বিয়ে হয়। দম্পতি নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ কাঁচপুর এলাকায় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। তাদের লিমা নামে সাত বছর বয়সী এক কন্যা সন্তান রয়েছে।
স্বজনদের অভিযোগ, হ্যাপি কাঁচপুর এলাকার টেইলার্স কর্মী রুবেল মিয়ার সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। গত ২০ অক্টোবর রাতে ভাড়া বাসায় ইকবাল হঠাৎ স্ত্রীর সঙ্গে তার প্রেমিককে ধরে ফেলেন। তখন কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে হ্যাপি ও রুবেল মিলে ইকবালকে হত্যা করেন।
পরদিন (২১ অক্টোবর) সকালে হ্যাপি স্বামীর মরদেহ নিয়ে গাইবান্ধার গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন। গভীর রাতে মরদেহ বাড়িতে পৌঁছানোর পর মেয়েটি লিমা পরিবারের সদস্যদের জানায়—তার বাবা মাকে ও রুবেল চাচাকে ঝগড়া করতে দেখেছে, পরে বাবা আর নড়াচড়া করেননি। এরপর মরদেহে একাধিক আঘাতের চিহ্ন দেখতে পান স্বজনরা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, পরিকল্পিতভাবে রুবেলকে সঙ্গে নিয়ে হ্যাপি তার স্বামীকে হত্যা করেছেন। পরে ঘটনাটি গোপন রেখে মরদেহ দাফনের চেষ্টা করেন, কিন্তু শিশুকন্যার কথায় পুরো বিষয়টি ফাঁস হয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় এবং হ্যাপিকে আটক করে।
সদর থানার ওসি মো. শাহীনুল ইসলাম তালুকদার জানান, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ঘটনাটি রূপগঞ্জ থানা এলাকায় ঘটেছে। তাই ভুক্তভোগী পরিবারকে সেখানে মামলা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আটক হ্যাপিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তার বক্তব্য রেকর্ড করা হচ্ছে এবং তাকে রূপগঞ্জ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
স্বজন ও এলাকাবাসী হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।