Message: Return type of CI_Session_files_driver::open($save_path, $name) should either be compatible with SessionHandlerInterface::open(string $path, string $name): bool, or the #[\ReturnTypeWillChange] attribute should be used to temporarily suppress the notice
Message: Return type of CI_Session_files_driver::close() should either be compatible with SessionHandlerInterface::close(): bool, or the #[\ReturnTypeWillChange] attribute should be used to temporarily suppress the notice
Message: Return type of CI_Session_files_driver::read($session_id) should either be compatible with SessionHandlerInterface::read(string $id): string|false, or the #[\ReturnTypeWillChange] attribute should be used to temporarily suppress the notice
Message: Return type of CI_Session_files_driver::write($session_id, $session_data) should either be compatible with SessionHandlerInterface::write(string $id, string $data): bool, or the #[\ReturnTypeWillChange] attribute should be used to temporarily suppress the notice
Message: Return type of CI_Session_files_driver::destroy($session_id) should either be compatible with SessionHandlerInterface::destroy(string $id): bool, or the #[\ReturnTypeWillChange] attribute should be used to temporarily suppress the notice
Message: Return type of CI_Session_files_driver::gc($maxlifetime) should either be compatible with SessionHandlerInterface::gc(int $max_lifetime): int|false, or the #[\ReturnTypeWillChange] attribute should be used to temporarily suppress the notice
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বাংলাদেশকে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের অন্যতম শর্ত ছিল চলতি বছরের জুনের মধ্যে নিট আন্তর্জাতিক রিজার্ভ (এনআইআর) ২৪ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলারে রাখা। তবে সেই শর্ত পূরণ করতে পারেনি বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন শর্ত পূরণ সম্ভব হয়নি তা আইএমএফ মিশনের সঙ্গে বৈঠক জানিয়েছে সংস্থাটি।
বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের সম্মেলন কক্ষে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, ঋণের শর্তানুযায়ী যেসব সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে সে বিষয়ে আইএমএফকে জানানো হয়েছে। আর যেসব শর্ত পূরণ করতে পারেনি তার কারণও ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক সাংবাদিকদের বলেন, আইএমএফ ঋণ অনুমোদনের সময় আমাদের কিছু শর্ত দিয়েছিল। এর মধ্যে বেশকিছু শর্ত পূরণ করা হয়েছে। দুই-একটি জায়গায় ব্যর্থতা আছে। রিজার্ভ কিছু কম আছে। রাজস্ব আহরণ কম হয়েছে। তবে অনেক কিছু বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ব্যাংকগুলোর আর্থিক স্থিতিশীলতা প্রতিবেদন প্রকাশের কথা ছিল, কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রকাশ করেছে। বিপিএমসিক্স অনুযায়ী রিজার্ভ হিসাবায়ন করা হচ্ছে। এছাড়া মুদ্রার বাজার নির্ধারিত বিনিময় হার প্রবর্তন করা হয়েছে। সুদহারের নতুন নিয়ম চালু করা হয়েছে। তাদের দেওয়া যেসব শর্ত অর্জন হয়েছে তা জানিয়েছি আর যেগুলো অর্জন হয়নি সেগুলো কেন হয়নি তাও জানানো হয়েছে।
শর্ত পূরণ না হওয়া নিয়ে আইএমএফের পক্ষ থেকে কী বলা হয়েছে- এমন প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের এ মুখপাত্র বলেন, আজ কেবল বৈঠক শুরু হয়েছে। তারা (আইএমএফ) বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার সঙ্গে বসে আলোচনা করবে। প্রথমে তথ্য নিচ্ছে তারপর আবার বৈঠক করবে। আগামী ১৯ অক্টোবর শেষ মিটিং, সেখানে তাদের মতামত জানাবে। আমরাও আমাদের বিষয়গুলো জানাব।
সোমবার (১৮ আগস্ট) বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির বৈঠক শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, “নাসির উদ্দিন সাথীকে যদি অবৈধভাবে গ্রেপ্তার করা হয়ে থাকে, তাহলে আদালত তাকে ছেড়ে দেবে। বিচারব্যবস্থা স্বাধীনভাবে কাজ করছে। এখানে হস্তক্ষেপ করার কিছু নেই।”
এ সময় তিনি জানান, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে নিরাপত্তা জোরদারে বিপুল সংখ্যক জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
তার ভাষ্য, “পুলিশে ১৫ হাজার ৮৫১ জন, বিজিবিতে ৪ হাজার ৪৬৯ জন, আনসারে ৫ হাজার ৫৫১ জন, কারা, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সে মোট ২০৮ জন নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এসব নিয়োগের মধ্যে কিছু সৃজিত এবং কিছু শূন্য পদে।”
তিনি বলেন, “নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর থেকে কনস্টেবল পর্যন্ত রয়েছে। আনসার ও বিজিবিতেও কনস্টেবল নিয়োগ হয়েছে।”
মব জাস্টিস নিয়ে উদ্বেগ
মব জাস্টিস প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “আমরা চাই মব জাস্টিস যতটা সম্ভব কমিয়ে আনা যায়। ঢাকায় কিছুটা কমেছে, কিন্তু আশপাশে এখনও কিছু ঘটনা ঘটছে। রংপুরে কিছুদিন আগে একটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা চাই, সাধারণ মানুষ বা নির্দোষ কেউ যেন হয়রানির শিকার না হয়। তবে দোষী কেউ ছাড় পাবে না। সমস্যা হলো, আমরা সবসময় চুনোপুঁটি ধরি, বড় রুই মাছ ছাড়া পেয়ে যায়। এখন একটা বড় রুই মাছ ধরা পড়েছে, সবাই লেগে গেছেন। অথচ ছোটখাটো নির্দোষ কারও বিষয়ে তখন কেউ কথা বলেন না।”
সংবাদকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনারা সবসময় সত্য বলেন, এজন্য আপনাদের ধন্যবাদ। আমরা চাই আপনারা সত্য ঘটনাগুলো তুলে ধরেন।”
সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর
‘বিদ্বেষমূলকভাবে বেআইনি রায়’ প্রদান এবং ‘জাল রায়’ তৈরির অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বুধবার (৩০ জুলাই) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত এই আদেশ দেন।
মামলাটি রাজধানীর শাহবাগ থানায় দায়ের করে পুলিশ, যেখানে রিমান্ড আবেদন করা হয় ১০ দিনের জন্য। শুনানিকালে খায়রুল হকের পক্ষে কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না।
গত ২৪ জুলাই ধানমন্ডির নিজ বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাকে ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে যুবদলকর্মী আবদুল কাইয়ুম আহাদ হত্যা মামলায় এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করে বেআইনি রায় প্রদানের অভিযোগে নারায়ণগঞ্জের একটি মামলায়ও গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
আজকের রিমান্ড মঞ্জুরের মধ্য দিয়ে পৃথক তিন মামলায় সাবেক এই প্রধান বিচারপতিকে গ্রেপ্তার দেখানো হলো।
উল্লেখ্য, এ বি এম খায়রুল হক ২০১০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর দেশের ১৯তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে তার দায়িত্ব কার্যকর হয় এবং ২০১১ সালের ১৭ মে তিনি অবসরে যান।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মূল নায়ক তারেক রহমান: আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী
জুলাই আগস্ট আন্দোলনের মূল নায়ক তারেক রহমান এবং সবচেয়ে বেশি ভূমিকা বিএনপির বলে দাবি করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, জুলাই আগষ্টের আন্দোলনের মূল নায়ক ছিলেন তো তারেক রহমান এবং যার সবচেয়ে বেশি দিন আত্মত্যাগ, সেটা হচ্ছে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। বক্তৃতা এটা দিয়ে শুরু করতে হবে। যাদের কারণে আজ শেখ হাসিনা পালাতে বাধ্য হয়েছে। জুলাই আগস্টের আন্দোলন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবশ্যই, কিন্তু সে আন্দোলনেও সবচেয়ে বেশি ভূমিকা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের।
তিনি শনিবার (২৬ জুলাই) বিকালে নগরীর জিইসি মোড়স্থ জিইসি কনভেনশন সেন্টারে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ চট্টগ্রাম শাখার উদ্যোগে জুলাই আগষ্ট গনঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আলোচনা সভা ও পেশাজীবী মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহবায়ক জাহিদুল করিম কচির সভাপতিত্বে ও আইনজীবী ফোরামের সদস্য সচিব এড. হাসান আলী চৌধুরী এবং মহানগর ড্যাবের সাধারণ সম্পাদক ডা. ইফতেখার ইসলাম লিটনের পরিচালনায় এতে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সম্মিলিত পেশাজীবি পরিষদের কেন্দ্রীয় আহবায়ক অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এস এম ফজলুল হক। উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির সদস্য ইসরাফিল খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
আলোচনা সভা শুরুর আগে আওয়ামী দুঃশাসন ও জুলাই আগষ্টের গনঅভ্যুত্থানের উপর নির্মিত ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।
আমীর খসরু বলেন, ১৬ বছরের আন্দোলন সংগ্রামে, আমাদের (বিএনপি) এত মানুষের যে আত্মত্যাগ, সেটা এখন আবার অনেকে ভুলে যেতে বসেছে। এখন জুলাই-আগস্ট নিয়ে যে আলোচনা হচ্ছে, তাতে ১৬ বছর ধরে যে মানুষগুলো একটা কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে সবচেয়ে বেশি ত্যাগ স্বীকার করেছে, সেটা কিন্তু আলোচনায় আসছে না। তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য ধ্বংস হয়ে গেছে, পরিবার ধ্বংস হয়ে গেছে, চাকরিচ্যুত হয়েছে, বাড়িঘরে থাকতে পারেনি, বেশিরভাগ সময় কোর্ট-কাচারিতে কাটিয়েছে। বলতে কষ্ট হচ্ছে- এমন অনেকে আছে, স্ত্রী স্বামীকে ত্যাগ করে চলে গেছে, বছরের পর বছর স্বামী ঘরে না থাকার কারণে, এরকম ঘটনা আছে। সেগুলো কিন্তু আলোচনায় আসছে না।
আগামী নির্বাচনে জনগণের রায় নিয়ে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে প্রথম ১৮ মাসে এক কোটি মানুষের কর্মসংস্থান করার কথা পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, আগামীর বাংলাদেশের তরুণদের ভবিষ্যৎ কী হবে, সেই চিন্তা আমরা করে রেখেছি। আমরা এক কোটি তরুণের কর্মসংস্থানের কথা বলছি প্রথম ১৮ মাসে। আমরা কিন্তু এই কথাটা পলিটিক্যাল স্টেটমেন্ট হিসেবে বলছি না, অঙ্কের হিসাব-কিতাব করে, কোন সেক্টরে কত চাকরি হবে, দেশে কত হবে, বিদেশে কত হবে, আর্ত্মকমসংস্থান কত হবে, আমরা হিসাব-কিতাব করে বের করেছি। এগুলোর জন্য রাষ্ট্রীয় নীতিমালায় পরিবর্তন আনবো, সেটাও আমরা রেডি করেছি।
তিনি বলেন, সুতরাং আমরা যা বলছি সেগুলো পলিটিক্যাল স্টেটমেন্ট না, এগুলো তারেক রহমান সাহেব নীতিনির্ধারকদের নিয়ে এ কাজগুলো প্রায় সমাপ্ত করে ফেলেছেন। স্বাস্থ্যখাতে কী হবে, শিক্ষাখাতে কী হবে, আইটি সেক্টর, ইন্ডাস্ট্রিতে, কৃষিখাতে কী হবে- সব আমরা হোমওয়ার্ক করে রেখেছি। আমরা এক কোটি চাকরির কথাও আমরা হোমওয়ার্ক করেই বলেছি। এজন্য যেসব এক্সপার্টিজ আছেন, তারাও আমাদের সাথে কাজ করছেন। আমাদের তো দেশ গড়তে হবে। পলিটিক্যাল স্লোগান দিয়ে তো দেশ গড়া যাবে না। এখন আমাদের মানুষের কাছে পরিস্কার করতে হবে যে আমরা কীভাবে আগামীর বাংলাদেশ গড়বো।
এখন দেশ গড়ার সময় মন্তব্য করে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আজকের প্রেক্ষাপটে বিএনপির ৩১ দফার ভিত্তিতে এখন আমাদের দেশ গড়ার সময়, জাতি গঠনের সময়। এতদিন শেখ হাসিনার পতন ছিল আমাদের মূল লক্ষ্য। এখন তারেক রহমান বলছেন, রাজনীতিতে সহনশীলতার কথা। ভিন্নমত পোষণ করেও অপরের মতকে সম্মান জানানোর কথা বলছেন। কারণ রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন না হলে একশ সংস্কার করেও কোনো লাভ হবে না।
তিনি বলেন, নেতাকর্মীদের বলবো- অপরের সাথে দ্বিমত করেও তার মতের প্রতি সম্মান জানাবেন, অসুবিধা নেই। আমরাতো যুদ্ধক্ষেত্রে নেই, আমাদের দেশ গড়তে হবে। নির্বাচনের পর তো আমাদের দেশটাকে গড়তে হবে। জিয়াউর রহমান সাহেব যেভাব দেশ গড়েছেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যেভাবে দেশ গড়েছেন, তারেক রহমান সাহেব দেশ গড়ার যে স্বপ্ন জাতির সামনে তুলে ধরছেন, সেই গল্প জনগণকে বলতে হবে, দেশবাসীর সামনে ৩১ দফার গল্প তুলে ধরতে হবে।
তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লবের কথা বলতে গেলে ১৬ বছরের আন্দোলনে যাদের অবদান আছে, তাদের সবার কথা বলতে হবে এবং এটা শুরু করতে হবে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে দিয়ে। এই আন্দোলনের এক নম্বর অবদান দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার, এটাও কিন্তু অনেকে বলতে ভুলে গেছে। দেশনায়ক তারেক রহমান বছরের পর বছর এ আন্দোলনের জন্য জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে সক্ষম হয়েছেন, সেই কথাটাও কিন্তু জুলাইয়ের আলোচনায় খুব কম করে আসছে। আসলে এই আন্দোলনের মূল নায়ক তো ছিলেন তারেক রহমান আর সবচেয়ে বেশি আত্মত্যাগ যেটা, সেটা করেছেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। বক্তব্য এটা দিয়েই শুরু করতে হবে, যাদের কারণে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে।
তিনি বলেন, জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের, যুবদলের, শ্রমিক দলের, ছাত্রদলের, স্বেচ্ছাসেবক দলের, সমস্ত অঙ্গসংগঠনের। সবচেয়ে বেশি মানুষের প্রাণহানি হয়েছে, বিএনপির সাথে সম্পর্কিত যারা রাজনীতি করেছেন তারা। যারা জেলে গেছে, তাদের নব্বই শতাংশ ছিল বিএনপির। আমার সঙ্গে জেলে বন্দি ছিল কমপক্ষে ১০ হাজারের মতো, সেখানে ৯ হাজার হচ্ছে বিএনপি নেতাকর্মী। আর বাকি এক হাজারের মতো ছিল রিকশাওয়ালা ভাই, ঠেলাওয়ালা ভাই, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন মানুষ আছে।
আমীর খসরু বলেন, এই যে চরম কঠিন একটা সময়, আমরা সবাই অতিক্রম করেছি, বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা, এই কথাগুলো জুলাই-আগস্টের আলোচনায় কোথাও আসছে না। শহিদ ওয়াসিমের নামটা পর্যন্ত আমি ঢাকায় কোথাও দেখি না। যে জুলাই আন্দোলনে প্রথম শহিদ ওয়াসিম, তার নামটা কোথাও আলোচনায় নেই।
আন্দোলনের কৃতিত্ব বিএনপি কখনো এককভাবে দাবি করে না জানিয়ে তিনি বলেন, এই যে বিএনপির কথা আলোচনায় আসছে না, এটা নিয়ে আমরা বাড়াবাড়ি করিনি। কারণ এই বিপ্লব, এই আন্দোলনকে আমরা বিএনপির কৃতিত্ব হিসেবে দেখাতে চাই না। সমস্ত জাতি, সবাই একসাথে আন্দোলন করে সরকারের পতন ঘটিয়েছে, আমরা সেটাকে সেভাবে দেখাতে চেয়েছি। কৃতিত্বের দাবিদার যে সবচেয়ে বেশি বিএনপি, এটা আজ পর্যন্ত তারেক রহমান সাহেবও বলেননি, আমরাও বলিনি। একটাই কারণ- আন্দোলনকে দ্বিধাবিভক্ত আমরা করতে চাই না। আন্দোলনে বিভাজন আমরা করতে চাই না। আমরা এ আন্দোলনকে দেশের সকল মানুষের আন্দোলন হিসেবে দেখাতে চেয়েছি, যে কারণে বিএনপি কখনো কৃতিত্ব দাবি করে না এবং করবেও না। এটা বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের আন্দোলন হিসেবে আমরা আখ্যা দিয়েছি।
আমীর খসরু বলেন, আমার সবসময় শেখ হাসিনার মুক্তিযুদ্ধের কৃতিত্ব দাবির কথা মনে পড়ে। মুক্তিযুদ্ধ করলো কারা আর সারাজীবন সেটার কৃতিত্ব দাবি করলো শেখ হাসিনা। ত্রিশ লাখ মানুষ প্রাণ দিয়েছে, মহিলারা রেপের শিকার হয়েছে, অথচ শেখ হাসিনা কৃতিত্ব দাবি করেছে শুধু তার নিজের এবং পরিবারের। এখনও সেই অবস্থা যাতে না হয়, সেজন্য বিএনপি কখনও একক কৃতিত্ব দাবি করছে না। তবে রেকর্ডের জন্য আমাদের নেতাকর্মীদের সবাইকে জানতে হবে।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, বিগত সাড়ে ১৫ বছর বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্নভাবে সম্মিলিত পেশাজীবি পরিষদের আয়োজনে অংশগ্রহণ করেছি। দেশের ইতিহাসে প্রত্যেকটি আন্দোলনের পেছনে নানা ইতিহাস ছিল। এখন কেউ কেউ বলার চেষ্টা করছে, জুলাই আগষ্টের গনঅভ্যুত্থান একমাসে শেষ হয়েছে। কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না যে, ৪৭ না হলে ৫২ হতো না, ৭১ না হলে ৭৫ এর সিপাহী জনতার বিপ্লব হতো না। এগুলো অস্বীকার করা যাবে না। এখন সকলেই কৃতিত্ব দাবী করে। ৭১ এ জিয়াউর রহমানের ভূমিকা ছিল। কিন্তু তিনি কৃতত্ব চাননি। অর্থাৎ আন্দোলন সংগ্রাম ও দেশ পরিচালনা একদিনে হয় না। এগুলো ধীরে ধীরে ডেবলেফ করে। একইভাবে ওয়াসিম আকরাম ও আবু সাইদের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে মানুষের ক্ষোভ ফুটে উঠেছে।
জাহিদ হোসেন বলেন, ভুয়া মামলার আমদানিকারক আওয়ামী লীগ। স্বাধীনতার আগে 'কম্বলচোর' শব্দ সম্পর্কে আমরা জানতাম না। সেগুলো এনে দিয়েছে তারাই। আজকে যারা মাসে মাসে টাকা নেয় সেটা হয় সহযোগিতা। আর কেউ যদি অনুষ্ঠানের জন্য টাকা নেয় সেটা আরেকটা নাম হয়ে যায়। আমাদেরও জানার আগ্রহ হয়, বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য বদলানোর নামে বিদেশসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে টাকা নিয়েছেন। কিন্তু মানুষের কোন ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। পাল্টেছে সেই দল ও তাদের ভাগ্য। ফলে ৭১ পরবর্তী স্বৈরাচারের দোসর কারা ছিল, সেগুলো কি ভুলে গেছেন? মানুষ ভুলেনি। ওনারাই ৯৬ সালে আমাদের বিরুদ্ধে হরতাল করেছিল। স্বৈরাচারকে পুনর্বাসন করার জন্য পূর্বের ইতিহাসে যাদের ভূমিকা ছিল তারাই ওরা। তারাই এখন বিএনপির বিরুদ্ধে কথা বলেন। কাজেই বিএনপির বিরুদ্ধে কথা বলতে গেলে নিজেদের চেহারা আগে একবার আয়নায় দেখবেন। প্রতিযোগিতা থাকা ভালো, প্রতিহিংসা ভালো না। আমরা রাষ্ট্র সংস্কারে ৩১ দফা দিয়েছি। আপনারাও দেন। কিন্তু গায়ের জোরে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা যারা করছে তাদের কথা আমরা বলতে পারি না, সেই সিদ্ধান্ত জনগণ নিবে। ঐক্যের ডাক বিএনপিই দিয়েছে। ফলে অনৈক্য করলে জনগণই আপনাদের পেছনে ফেলে দিবেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, এই ৩৬ দিনের আন্দোলন কোনো বিচ্ছিন্ন অভ্যুত্থান নয়, বরং এটি গত ১৬ বছরের লাগাতার আন্দোলনের ফল। এ আন্দোলনে বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা, পেশাজীবীরা, যুবক নারী ছাত্র শ্রমিক সকলেই অংশগ্রহণ করেছে।
ফ্যাসিস্ট অপশক্তির বিচার দাবি করে তিনি বলেন, আমার নিজের বাসায় এবং ভাইয়ের বাসায় ৩ আগস্ট আগুন লাগানো হয়, গাড়ি ভাঙচুর হয়। আমার মা সেই আগুনে অবরুদ্ধ ছিলেন। অথচ এসব হামলার বিচার হয় না। অন্য কারো বাসায় তো আগুন লাগানো হয়নি। এভাবে যারা জনগণের উপর হামলে পড়েছিল তাদের বিচার চাই।
জুলাই আন্দোলনের কৃতিত্ব কোন একক ব্যক্তি বা গোষ্ঠির নয় বিধায় আন্দোলনের কৃতিত্ব হাইজ্যাকের অপচেষ্টাকারীদের সতর্ক করে তিনি বলেন, ৩৬ দিনের আন্দোলনকে হাইজ্যাক করার কোনো সুযোগ নেই। এটি বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের ত্যাগ ও সংগ্রামের দীর্ঘ পথচলারই ফসল। সবচেয়ে বেশি নিপীড়নের শিকার হয়েছেন বিএনপির নেতাকর্মীরাই। গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা, মিথ্যা মামলা, কারাবরণ, সবখানেই আমরা এগিয়ে।
শেষে মেয়র বলেন, ওয়াসিম আকরামের নামে আমরা সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে একটি পার্ক করেছি। বিমানবন্দরের কাছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের একটি অংশও তাঁর নামে নামকরণ করা হয়েছে। ওয়াসিম আকরাম ইতিহাসে ও মানুষের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন।
সভাপতির বক্তব্যে জাহিদুল করিম কচি বলেন, ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে মহাবিল্পবের মধ্য দিয়ে। কিন্তু ফ্যাসিবাদি সাংবাদিকরা এখন নতুন করে চক্রান্ত শুরু করেছে। সকল পেশাজীবিদের আহ্বান জানাবো, তাদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে যোক্তিকভাবে প্রতিহত করার জন্য।
এতে বক্তব্য রাখেন সন্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব ডা. খুরশীদ জামিল চৌধুরী, প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির ভিসি অধ্যাপক ড. নসরুল কদির, এ্যাবের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার জানে আলম সেলিম, সিএমইউজে'র সাবেক সভাপতি শামসুল হক হায়দরী, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সহকারী মহাসচিব মুস্তাফা নঈম, বার কাউন্সিলের সদস্য এড. এ এস এম বদরুল আনোয়ার, সিএমইউজে'র সাধারণ সম্পাদক সালেহ নোমান, জেলা ড্যাবের সাবেক সভাপতি ডা. আশরাফুল কবির ভূইয়া, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এড. আবদুল সাত্তার, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের আহবায়ক এড. তারিক আহমেদ, মহানগর পিপি এড. মুফিজুল হক ভূইয়া, ড্যাব নেতা ডা. ঈসা চৌধুরী, ইঞ্জিনিয়ার মেজবাউল আলম, সিটি করপোরেশন কলেজ শিক্ষক সমিতির আহবায়ক আবদুল হক, ব্যাংকার মেহরাব হোসেন খান, ইঞ্জিনিয়ার মো. ওসমান, সিদ্দিক আল মামুন প্রমূখ।
বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে যুবকের মৃত্যু, সন্দেহ চুরির চেষ্টা
কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের জাদিমোরা এলাকায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে রিদুয়ান রহমান (২২) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সকালে স্থানীয়রা মঞ্জুর আলমের কাঠের দোকানের টিন কাটা অবস্থায় তার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন।
নিহত রিদুয়ান ওই এলাকার ফরিদ আলমের ছেলে। ধারণা করা হচ্ছে, সোমবার রাতে তিনি দোকানে চুরির উদ্দেশ্যে ঢোকার চেষ্টা করেন। এ সময় বৈদ্যুতিক মোটর থেকে শর্ট সার্কিট হয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন এবং ঘটনাস্থলেই মারা যান।
এ বিষয়ে উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফ হোসেন জানান, মরদেহ উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, এটি চুরির সময় ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনা।
এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, তাদের সামনে আরেকটি লড়াই আসছে, সেই লড়াইয়ের জন্য তারা প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
শুক্রবার (১৮ জুলাই) দুপুরে মুন্সীগঞ্জ শহরে এনসিপির পথসভায় তিনি এ কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, গোপালগঞ্জে হামলা চালানো হয়েছে, বাংলাদেশের আরও ১০টা জায়গায় হামলা চালানো হলেও আমাদেরকে দমন করা যাবে না।
তিনি বলেন, আমরা জানি, আমাদের সামনে আরেকটি লড়াই আসছে। সেই লড়াইয়ের জন্য আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। ফ্যাসিবাদ বিলোপের যে লড়াই আমরা শুরু করেছি, সেই লড়াই শেষ না করে আমরা থামবো না।
বিএনপির ডাকে দ্বিতীয় দফায় দুই দিনের অবরোধ চলছে। দলটি তাদের আন্দোলনের কর্মসূচি অব্যাহত রাখবে বলে দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। দুই দিনের অবরোধের পর ৭ নভেম্বর বিএনপি সরকার বিরোধ কোনো কর্মসূচি রাখবে না। বিএনপি ওই দিনকে সিপাহী ও জনতার বিপ্লব দিবস হিসেবে পালন করবে।
তবে আবার বুধবার এবং বৃহস্পতিবার থেকে দুই দিনের ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ দেবে বলে একাধিক সূত্র বাংলা নিশ্চিত করেছে।
দুই দিনের অবরোধের পর শুক্র ও শনি দুই দিনের বিরতি থাকবে। বিএনপির কোনো কর্মসূচি পালন করবে না। আগামী রোববার থেকে বিএনপি কি ধরনের কর্মসূচি পালন করবে তা নিয়ে একাধিক মতামত পাওয়া গেছে।
বিএনপির একটি সূত্র বলছে, রোববার থেকে বিএনপির অসহযোগ আন্দোলন কর্মসূচি পালন করতে পারে। এই অসহযোগ আন্দোলনের মূল লক্ষ্য হল সরকারের সাথে সব বিষয়ে অসহযোগিতা করা এবং সরকারকে অস্বীকৃতি প্রদান করা হবে। তবে এ ধরনের কর্মসূচি এখনই ঘোষণা করবে নাকি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার পর শুরু করা হবে এ নিয়ে বিএনপির মধ্যে ভিন্ন মত রয়েছে।
বিএনপির কোনো কোনো নেতা মনে করছেন যে রোববার থেকে অর্থাৎ ১২ নভেম্বর থেকে অসহযোগ আন্দোলন শুরু করাটাই সঠিক সিদ্ধান্ত হবে। এই অসহযোগ আন্দোলনের মাধ্যমে আস্তে আস্তে জনগণকে সম্পৃক্ত করা হবে। আর অন্যদিকে বিএনপির কিছু নেতা মনে করছেন যে এখনই অসহযোগ আন্দোলন না দিয়ে বরং বিএনপিকে অবরোধ কর্মসূচি অব্যাহত রাখা উচিত। যখন নির্বাচন কমিশন তার নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে ঠিক সেই সময় অসহযোগ আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা উচিত বলে তারা মনে করছেন।
তবে অসহযোগ আন্দোলন করুক না করুক বিএনপি আন্দোলন বন্ধ করতে চায় না। বরং তারা টানা আন্দোলনের কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে চায়। কিন্তু এই আন্দোলন ইতোমধ্যে অকার্যকর এবং অর্থহীন হয়ে পড়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে গতকাল থেকে যে অবরোধের ডাক দিয়েছে সেই অবরোধ দিনের শুরু থেকেই অকার্যকর হয়েছে। সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকার তাগিদে বের হয়েছে। সংখ্যার দিক থেকে যানবাহন চলাচল কিছুটা কম হলেও দুপুর গড়াতে গড়াতেই যানবাহনের চলাচল বেড়ে গেছে। বিক্ষিপ্তভাবে কিছুভাবে ভাঙচুর আর রাত্রে গুপ্ত হামলার মতো কিছু গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ছাড়া বিএনপির অসহযোগ আন্দোলনের আর কোনো ছাপ নেই। আর এধরনের গুপ্ত হামলা বা গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনার ফলে জনমনে বিএনপির ওপর এক ধরনের বিরক্তি তৈরি হচ্ছে।
বিএনপি ক্রমশ জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন। তাই এই ধরনের কর্মসূচি কতটুকু কার্যকর হবে বা এ ধরনের কর্মসূচি করে বিএনপি আসলে কি অর্জন করতে চায় তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
বিএনপি নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা এ ব্যাপারে অসহায়। বিএনপির অন্তত দুজন নেতা বলেছেন যে আমরা এ ধরনের কর্মসূচিতে যেতে রাজি নই। কিন্তু লন্ডনে পলাতক দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া এই কর্মসূচির ধারা অব্যাহত রাখার জন্য ইতোমধ্যে চাপ দিচ্ছেন। আর এই সমস্ত চাপের কারণে বিএনপিকে কর্মসূচি দিতে হচ্ছে। বিএনপির বিভিন্ন নেতা মনে করছেন এখন থেকে এ ধরনের কর্মসূচি দেওয়া হলে জানুয়ারিতে যদি নির্বাচন হয় তাহলে নির্বাচন পর্যন্ত এই কর্মসূচি ধরে রাখা অসম্ভব ব্যাপার।
তবে বিএনপির কোনো কোনো নেতা মনে করছেন যে এ ধরনের কর্মসূচি কিছুদিন থাকলেই সরকারের টনক নড়বে, আন্তর্জাতিক চাপ বাড়বে। এবং তখন সরকার বিএনপির সঙ্গে আলাপ-আলোচনা বা সমঝোতার জন্য রাজি হতে পারে। এরকম একটি আশাবাদ থেকে বিএনপির কেউ কেউ কর্মসূচি অব্যাহত রাখার পক্ষপাতি। তবে এ ধরনের কর্মসূচি শেষ পর্যন্ত বিএনপিকে অস্তিত্বহীন করবে কিনা এই প্রশ্নটিই এখন ক্রমশ বড় হয়ে উঠেছে।
বিএনপি-জামায়াতের ডাকা দ্বিতীয় দফার অবরোধের প্রথম দিনে দুই জায়গায় পেট্রোল বোমা হামলার খবর এসেছে। এরমধ্যে প্রথম হামলা হয়েছে রাজধানীর বনশ্রীতে। দ্বিতীয়টি হয়েছে সিলেটের পারাইরচক জলকরকান্দি এলাকায়। রাজনৈতিক আন্দোলন ঘিরে নতুন করে পেট্রোল বোমা হামলার ঘটনায় জনসাধারণের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
তারা বলছেন, ২০১৩-১৪-১৫ সালে সারা দেশে ব্যাপক পেট্রোল বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। এর শিকার হয়েছিল সাধারণ মানুষ। হরতাল কিংবা অবরোধ-যাইহোক, কর্মজীবি মানুষকে আতঙ্ক মাথায় নিয়ে ছুটতে হয় কর্মস্থলে। রাজনৈতিক দলগুলোর আন্দোলনে নির্মমতার শিকার কেন সাধারণ মানুষ হবে?
এদিকে বিএনপি-জামায়াতের দ্বিতীয় দফা ডাকা অবরোধের প্রথমদিন রোববার ঢাকায় চার বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। সকাল ৭টার দিকে রাজধানীর বনশ্রীর মেরাদিয়া বাঁশপট্টি এলাকায় অছিম পরিবহন নামে একটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে রমজান পরিবহনের বাসের চালক দগ্ধ হন। বিকেলে রাজধানীর মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজের সামনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এরপর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বাংলামোটরে একটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। রূপায়ন টাওয়ারের সামনে বাসটিতে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায় তারা। এ ছাড়াও মিরপুরে শিকড় পরিবহনে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। সন্ধ্যা ৭টার দিকে পল্লবী এলাকায় সেতারা কনভেনশন সেন্টারের সামনে ওই বাসে আগুন দেওয়া হয়।
এর সকালে খিলগাঁও থানার বনশ্রী এলাকায় অছিম পরিবহন নামে একটি বাসে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মো. সবুজ (৩০) নামে এক গাড়িচালক দগ্ধ হন। তিনি রমজান পরিবহনের চালক ছিলেন। এছাড়া দুপুরে উত্তরা হাউজবিল্ডিং এলাকায় পুলিশের টহল গাড়িকে লক্ষ্য করে ককটেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। ওই ককটেল বিস্ফোরিত হয়ে উত্তরা পশ্চিম থানার এসআই মাহবুব আলীসহ তিন পুলিশ সদস্য আহত হন। এর বাইরে ঢাকাসহ দেশব্যাপী বিভিন্ন স্থানে অবরোধ সমর্থনকারীদের বিক্ষোভ-অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার রাতে রাজধানীর গুলিস্তানে একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। ওইদিন সন্ধ্যায় রাজধানীর আরও তিনটি এলাকায় বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে রাজধানীর নিউমার্কেট, এলিফ্যান্ট রোড ও সায়েদাবাদ জনপথের মোড়ে যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।
বিএনপির ডাকা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে শনিবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে রোববার সকাল সাড়ে ৬টা রাজধানীসহ সারাদেশে ১২টি স্থানে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে রাজধানীতে সাত জায়গায় আগুন লাগানো হয়েছে। ১০টি বাস, একটি রাজনৈতিক দলের কার্যালয় পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। রোববার সকালে এসব তথ্য জানান ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম।
ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা জানান, শনিবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে রোববার সকাল ৬টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত অবরোধের আগের রাতে ১২টি স্থান থেকে আগুনের সংবাদ পাওয়া গেছে। ঢাকা শহরে সাতটি, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর দুটি, সিরাজগঞ্জে একটি, বরিশালের চরফ্যাশনে একটি, রংপুরের পীরগঞ্জে একটি ঘটনা ঘটে। তিনি আরও জানান, ঢাকাসহ সারাদেশে ৯টি বাসে আগুন, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের বাদলপুরে আওয়ামী লীগের পার্টি অফিসে আগুন এবং একটি জায়গায় গাড়ির পরিত্যক্ত টায়ারে আগুন দেওয়া হয়েছে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গত বছর থেকে সরকারবিরোধী আন্দোলন জোরদার করেছে রাজপথের প্রধান বিরোধী শক্তি বিএনপি। সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে গত ২৯ অক্টোবর হরতাল ও ৩১ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত অবরোধ পালনের মাধ্যমে সেই আন্দোলনের ধারায় ফিরেছে দলটি। দ্বিতীয় ধাপে রবিবার (৫ নভেম্বর) ও সোমবার (৬ নভেম্বর) সারা দেশে দলটি অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে।
বিএনপির প্রথম ধাপের অবরোধের সময় থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে ককটেল বিস্ফোরণসহ আগ্নিসংযোগ ও ভাংচুরের খবর পাওয়া গেছে। একইসঙ্গে দেশের বিভিন্ন জায়গা পেট্রোল বোমা উদ্ধারের খবর দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এই বোমাসহ অনেকে আটকও হয়েছেন।
বিএনপির অবরোধের দ্বিতীয় ধাপের প্রথম দিনেই দেশের দুই জায়গায় পেট্রোল বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে। রবিবার সকাল ৭টার দিকে রাজধানীর বনশ্রীতে অছিম পরিবহনের একটি বাসে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে দুর্বৃত্তরা। আগুন লাগা মাত্র চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাশের খাদে ফেলে দেয় বাসটি। এতে বাসচালক সবুজ দগ্ধ হয়েছেন।
একইদিন সিলেট-ফেঞ্চুগঞ্জ সড়কের পারাইরচক জলকরকান্দি এলাকায় একটি খাদ্যপণ্যবাহী পিকআপ ভ্যানে পেট্রোল বোমা মেরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এতে আগুন ধরে গাড়ির সামনের অংশ পুড়ে যায়। এ সময় পুলিশ এক পিকেটারকে আটক করে।
রাজধানীর যাত্রবাড়ি এলাকার বাসিন্দা রাসেল মাহমুদের কর্মস্থল কুড়িল বিশ্বরোড। নিয়মিত তাকে গণপরিবহনে যাতায়াত করতে হয়। রাসেল বলেন, বাসে উঠার সময়ই মনের মধ্যে একটা আতঙ্ক থাকে। তারপর তো কখন পৌঁছাব, ঠিকভাবে পৌঁছাতে পারব কি না, এসব চিন্তা তো থাকেই। যাত্রীদের নিরাপত্তায় বাসচালক ও সহকারীদের সতর্ক থাকতে দেখেছেন রাসেল। তিনি বলেন, তারা যাত্রীদের বাসের জানালা খোলা রাখতে দেন না। এখন তো বাসের জানালা দিয়েই আগুন দেওয়া হয়।
মিরপুর-১ নম্বর থেকে কারওয়ান বাজার এলাকায় নিয়মিত যাতায়াত করে কর্মস্থলে যোগ দেন গাজী কাইয়ুম। তিনি মনে করেন, বাসে আগুন দেওয়া বা পেট্রোল বোমা হামলা বন্ধ করার জন্য সাধারণ মানুষের সচেতনতা বেশি দরকার। মানুষ সচেতন থাকলেও এ ধরনের ঘটনা সহজে ঘটানো সম্ভব হবে না। তাছাড়া রাজনৈতিক দলগুলোর আন্দোলনে নির্মমতার শিকার কেন সাধারণ মানুষ হবে , এমন প্রশ্নও রেখেছেন তিনি।
কায়ুইম বলেন, আমরা তো চাকরি করি ভাই। অফিস না গেলে তো বেতন কাটবে কর্তৃপক্ষ। সংসার চালানো তখন দায় হয়ে যাবে। বাসা থেকে না বের হয়ে কোনো উপায় নেই। আজ শুনলাম বাসের ভেতর নাকি পেট্রোল বোমা মারছে। সেই ৬-৭ বছর এরকমটা শুনতাম প্রতিদিন। আমার চেয়ে পরিবারের অন্য সদস্যরা বেশি চিন্তিত থাকে, ঠিকভাবে বাসায় ফিরতে পারব কি না।
এদিকে অবরোধের মধ্যে চট্টগ্রামে বিএনপির ডাকা হরতালের শুরুতে পতেঙ্গা এলাকায় একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। রোববার ভোর পৌনে পাঁচটার দিকে পতেঙ্গা থানার কাটগড়ের গুমপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
পতেঙ্গা থানা পুলিশ জানিয়েছে, বাসটি পোশাক শ্রমিকদের বহন করার জন্য ওই এলাকায় অবস্থান করছিল।
দেশব্যাপী বিএনপি-জামায়াতের ডাকা দুইদিনের অবরোধে নগরীতে স্বাভাবিকের তুলনায় কম গণপরিবহন চলাচল করে। নগরীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে করে দেখা গেছে- রিকশা, সিএনজি অটোরিকশা, টেম্পু, ভাড়ায় চালিত রাইড, মিনিবাস চলাচল করলেও স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় সংখ্যা ছিল কম। অফিসগামী যাত্রীরদের বাড়তি ভাড়া দিয়ে অফিসের উদ্দেশ্যে যেতে দেখা গেছে।
এদিকে বিএনপির এই অবরোধ ঘিরে রাজধানীতে ব্যাপক সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য লক্ষ্য করা গেছে। রোববার সকাল থেকে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনেকটা ফাঁকা দেখা গেছে। এখনও কেন্দ্র তালাবদ্ধ। সেখানে দলবেঁধে পুলিশ অবস্থান করছে। এছাড়া ঢাকার প্রতিটি মোড়ে মোড়ে টহল দিতে দেখা গেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে।
নয়াপল্টনে সরেজমিনে দেখা গেছে, বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় দুই ইউনিটে ভাগ হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন পুলিশ সদস্যরা। সেখানে ব্যারিকেডও রাখা হয়েছে। সর্বাত্মক অবরোধে ঢাকা ও আশপাশের জেলায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ২৭ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। স্ট্যান্ডবাই রাখা হয়েছে আরও ১০ প্লাটুন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার প্রধান হারুন অর রশীদ মঙ্গলবার রাত ৯টায় এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, পুলিশ হত্যার মামলায় বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাস ও সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
হারুন অর রশীদ বলেন, গত ২৮ অক্টোবরে মহাসমাবেশের নামে সহিংসতা ও নাশকতার ঘটনায় দায়ের করা বেশ কয়েটি মামলার আসামি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তাদের গ্রেপ্তার করে ডিবি হেফাজতে নেওয়া হচ্ছে। আগামীকাল তাদের আদালতে সোপর্দ করা হবে।
তিনি আরও জানান, বিএনপির এ দুই নেতাকেই শাহজাহানপুর থানার শহীদবাগ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এর আগে সকালে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
এদিন এ মামলার সাফাই সাক্ষীর জন্য দিন ধার্য ছিল। তবে আসামি মির্জা আব্বাস ও সাফাই সাক্ষীরা আদালতে উপস্থিত না হয়ে সময়ের আবেদন করেন। আদালত সময়ের আবেদন না মঞ্জুর করে মির্জা আব্বাসের জামিন বাতিল করেন। একই সঙ্গে এ মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য আগামী ২ নভেম্বর দিন ধার্য করেন।
মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে আয়ের সঙ্গে সংগতিবিহীন ৭ কোটি ৫৪ লাখ ৩২ হাজার ২৯০ টাকার সম্পদ অর্জন এবং ৫৭ লাখ ২৬ হাজার ৫৭১ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ১৬ আগস্ট দুদকের উপপরিচালক মো. শফিউল আলম রাজধানীর রমনা থানায় মামলা দায়ের করেন।
তদন্ত শেষে ২০০৮ সালের ২৪ মে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক মো. খায়রুল হুদা আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। তদন্তে তার বিরুদ্ধে ৪ কোটি ২৩ লাখ টাকার সম্পদ অর্জন ও ২২ লাখ টাকার সম্পত্তির তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়।
২০০৮ সালের ১৬ জুন আদালত এ মামলার অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন। এ মামলার বিচার চলাকালীন আদালত ২৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।
রাজধানীর শহীদ বাগের ঢাকা ব্যাংক শাখা থেকে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩০ অক্টোবর) তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এর আগে সকাল থেকে তার শাহজাহানপুরের বাসা ঘিরে রেখেছিল পুলিশ।
সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
মঙ্গলবার (২৩ অক্টোবর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর মঞ্জুরুল ইমামের আদালতের তার জামিন বাতিল করে এ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
এদিন এ মামলার সাফাই সাক্ষীর জন্য দিন ধার্য ছিল। তবে আসামি মির্জা আব্বাস ও সাফাই সাক্ষীরা আদালতে উপস্থিত না হয়ে সময়ের আবেদন করেন। আদালত সময়ের আবেদন না মঞ্জুর করে মির্জা আব্বাসের জামিন বাতিল করেন। একই সঙ্গে এ মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য আগামী ২ নভেম্বর দিন ধার্য করেন।
মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে আয়ের সঙ্গে সংগতিবিহীন ৭ কোটি ৫৪ লাখ ৩২ হাজার ২৯০ টাকার সম্পদ অর্জন এবং ৫৭ লাখ ২৬ হাজার ৫৭১ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ১৬ আগস্ট দুদকের উপপরিচালক মো. শফিউল আলম রাজধানীর রমনা থানায় মামলা দায়ের করেন।
তদন্ত শেষে ২০০৮ সালের ২৪ মে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক মো. খায়রুল হুদা আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। তদন্তে তার বিরুদ্ধে ৪ কোটি ২৩ লাখ টাকার সম্পদ অর্জন ও ২২ লাখ টাকার সম্পত্তির তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়।
২০০৮ সালের ১৬ জুন আদালত এ মামলার অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন। এ মামলার বিচার চলাকালীন আদালত ২৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশজুড়ে চলমান সংকটের সমাধান খোঁজার তাগিদ দিয়েছেন সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির একাধিক সদস্য। এজন্য তারা সংলাপেরও আহ্বান জানান। মঙ্গলবার সংসদের বৈঠকে একটি বিলের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তারা এসব কথা বলেন। এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়।
সংসদের বৈঠকে ‘জেলা (পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলাসমূহে বলবৎকরণ) বিল’ পাসের আলোচনায় অংশ নিয়ে জাপার সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সংলাপ ডাকার আহ্বান জানান। যদিও এ সময় প্রধানমন্ত্রী সংসদে উপস্থিত ছিলেন না। একই সময়ে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছিলেন।
শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, এখনই সময় বঙ্গবন্ধু কন্যার একটি হাই টাইম ডায়ালগ ডাকার, শান্তি প্রতিষ্ঠা করার এবং একটা সুষ্ঠু সমাধানের দিকে দেশকে নিয়ে যাওয়ার। ভোট সামনে রেখে অনেক ধরনের ষড়যন্ত্র হচ্ছে, সামনেও হবে। গার্মেন্টসে আন্দোলন হচ্ছে। বিএনপিও আন্দোলন করছে, সেখানেও মারামারি হচ্ছে। সংঘাত দৃশ্যমান হচ্ছে।
জাপার এই সদস্য বলেন, এ মুহূর্তে আজকে সংঘাত আছে, জনমনে আতঙ্ক আছে। যেহেতু ড্রাইভিং হুইলে আছে সরকার, যেহেতু সরকার ক্ষমতায় আছে আইন প্রণয়নের ক্ষমতা, সমাধানের ক্ষমতা সরকারের হাতে, সরকারের এ বিষয়ে ডায়ালগ ডাকা উচিত। আলোচনা করা উচিত।
রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন থেকে ২০ মিলিয়ন ডলারে নেমেছে উল্লেখ করে শামীম হায়দার বলেন, বহির্বিশ্বের সাথে যদি আমাদের সম্পর্ক খারাপ হয়, একতরফা ইলেকশন হলে অর্থনৈতিক সম্পর্ক খারাপ হলে আমাদের এলসি কম আসবে, এটা আরও কমবে, একটা সময়ে জিরো হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে আগামী ২–৩ বছর পর।
তিনি বলেন, রাষ্ট্র সরকার তো এক দিনের জন্য না। একটা ভোটের জন্য না, দীর্ঘদিনের জন্য।
জাতীয় পার্টির আরেক সদস্য হাফিজ উদ্দীন আহমদ বলেন, আজ গোটা দেশ অশান্ত। অবরোধে বিভিন্ন জায়গায় মারামারি হচ্ছে। ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগের যে পরিস্থিতি দেশ সেদিকে যাচ্ছে। এর সুষ্ঠু সমাধান জরুরি। গার্মেন্ট শ্রমিকেরা রাস্তায় নেমেছে।
হাফিজ উদ্দীন বলেন, নির্বাচন কমিশন বলছে যথাসময়ে নির্বাচন। কীভাবে হবে? ২০১৪ সালের মতো? এর কী জবাব? তিনি বলেন, শান্ত পরিবেশ ফিরিয়ে আনুন, নির্বাচনের পরিবেশ ফিরিয়ে আনুন, শ্রমিকদের দাবি দাওয়া মেনে নিন।
পোশাক শ্রমিকদের নতুন মজুরি বোর্ড নভেম্বরে, কার্যকর ডিসেম্বরে
পোশাক শ্রমিকদের নতুন মজুরি কাঠামো ঘোষণা করা হবে নভেম্বরে। ডিসেম্বর থেকে এই মজুরি কাঠামো কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছেন তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান।
মঙ্গলবার বিজিএমইএ প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ফারুক হাসান এ তথ্য জানান।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, শ্রমিকদের কষ্ট হচ্ছে আমরা জানি। কিন্তু বিশ্ব অর্থনীতি এখন সংকটে আছে। আমাদের পোশাক রপ্তানি কমে গেছে। এ অবস্থায় আমরাও খুব একটা ভালো নেই।
ফারুক হাসান বলেন, বিশ্ব অর্থনীতি একটি কঠিন সময় পার করছে। এর চেয়ে কঠিন অবস্থায় আছে দেশের পোশাক শিল্প। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য ব্যয় সংকোচন নীতি গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি কমেছে বিশ্বব্যাপী ২৬ দশমিক ৮০ শতাংশ। অথচ বাংলাদেশ থেকে তাদের আমদানি কমেছে ২৯ দশমিক ১০ শতাংশ। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো আমদানি কমিয়েছে ৯ দশমিক ৬১ শতাংশ। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে কমেছে ১৩ দশমিক ৭১ শতাংশ। বিশ্বব্যাপী আমদানি কমেছে ১৪ দশমিক ৬৪ শতাংশ এবং বাংলাদেশের কমেছে ১৫ দশমিক ০৭ শতাংশ।
সার্বিকভাবে দেশের পোশাক রপ্তানি ২২ দশমিক ২৭ শতাংশ কমেছে জানিয়ে ফারুক হাসান বলেন, পোশাক শিল্প মালিকরা যদি মনে করেন তাদের শ্রমিকদের নিরাপত্তা, কারখানার নিরাপত্তা এবং সম্পদ রক্ষায় শ্রম আইনের ১৩/১ ধারায় কারখানা বিনা নোটিশে বন্ধ করতে পারবে, এর জন্য কোনো বেতন দিতে হবে না মালিকদের। এছাড়া আসছে নভেম্বর মাসে যে ঘোষণা মজুরি বোর্ড দেবে তা বিজিএমইএ মেনে নিয়ে ডিসেম্বরেই বেতন দেয়া হবে।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, দেশের পোশাক শিল্প এখন খুব ভালো অবস্থানে যাওয়ার চেষ্টায় এবং রাস্তায় আছে। কিন্তু এমন সময়ে শ্রমিকরা আন্দোলন করছেন তা অনভিপ্রেত। এই সময়ে দেশের মূল্যস্ফীতির চাপে পুরো দেশ এবং অর্থনীতি বিপর্যস্ত। এখন আন্দোলনের কারণে পোশাক কারখানা বন্ধ হলে শ্রমিক ভাইয়েরা কর্মহীন হয়ে পড়বেন, যা আমরা চাই না।
বক্তব্যের শুরুতে মৃত শ্রমিকদের প্রতি মাগফিরাত এবং পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান বিজিএমইএ সভাপতি। পাশাপাশি পোশাক মালিকদের ক্ষতিতে দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।
কালাজ্বর নির্মূলে বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ স্বীকৃতি দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে ভারতের দিল্লীতে চার দিনব্যাপী আয়োজিত ডব্লিউএইচওর ৭৬তম দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক সম্মেলনে বাংলাদেশকে এ স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের হাতে এই স্বীকৃতির সনদপত্র তুলে দেন ডব্লিউএইচও’র দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক পুনম খেত্রপাল। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে সনদ পাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, এর আগে বাংলাদেশ ফাইলেরিয়া ও পোলিও নির্মূল করে সনদ পেয়েছিল। এবার কালাজ্বর নির্মূলে বিশ্বে প্রথম হওয়ায় এটি একটি জাতিগতও প্রশংসিত অর্জন হয়েছে। এ অর্জনে দেশের স্বাস্থ্যখাতসহ আমরা সবাই গর্বিত। স্বাস্থ্যমন্ত্রী এই অর্জনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ পরামর্শ ও নির্দেশনার কথা উল্লেখ করেন। পাশাপাশি তিনি ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালকের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানান।
জাহিদ মালেক বলেন, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় কমিউনিটি ক্লিনিক এখন ভরসার জায়গা হতে পেরেছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের জন্য শেখ হাসিনার বিশেষ অবদান দেশের ১৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রায় ৬ হাজার মানুষ স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছে। ধীরে ধীরে দেশের দুর্গম এলাকাতেও প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে কমিউনিটি ক্লিনিক। তিনি বলেন, ক্লিনিকগুলো থেকে বিনামূল্যে ৩০ ধরনের ওষুধ দেয়া হচ্ছে। এর পাশাপাশি গ্রামের মায়েদের নিরাপদে সন্তান প্রসবের ক্ষেত্রেও কমিউনিটি ক্লিনিক কাজে লাগছে। এর সুফল হিসেবে গত কয়েক বছরের জরিপে বাংলাদেশে মাতৃমৃত্যু হার প্রতি লাখে ৩২০ জন থেকে হ্রাস পেয়ে এখন ১৬৩ জনে নেমেছে। একইভাবে প্রতি হাজার জীবিত শিশুর মৃত্যুহার ৬৫ জন থেকে হ্রাস পেয়ে ২৮ জনে নেমে এসেছে।
সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন, কমিউনিটি ক্লিনিকের সফলতার স্বীকৃতি হিসেবে সম্প্রতি জাতিসংঘ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কমিউনিটি ক্লিনিক ধারণা স্বীকৃতি পেয়েছে। এছাড়া মন্ত্রী বাংলাদেশের মাতৃমৃত্যু হার হ্রাস, শিশুমৃত্যু হার হ্রাস করা, গড় আয়ু বৃদ্ধি ও করোনা প্রতিরোধী টিকাদানে বাংলাদেশের ৯৮ ভাগ সফলতার বিষয়টি উল্লেখ করেন। পাশাপাশি করোনাকালে ১৫ হাজার চিকিৎসক ও ২৫ হাজার নার্সসহ প্রায় দেড় লাখ জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
সম্মেলনে বাংলাদেশ, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মালদ্বীপ, নেপাল, ভুটান, থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, পূর্ব-তিমুর ও উত্তর কোরিয়াসহ ১১টি দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব জাহাঙ্গীর আলম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব শাহাদত খন্দকার, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. হেলাল উদ্দিন প্রমুখ।
টানা ৭২ ঘণ্টার বিরোধী দলগুলোর ডাকা সর্বাত্মক অবরোধ শুরু হয়েছে। অবরোধের সর্মথনে সারাদেশে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। এসময় পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। পুলিশের গুলিতে কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে ছাত্রদল নেতা রেফায়েত উল্লাহ ও কৃষকদল নেতা বিল্লাল মিয়া নিহত হয়। সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার যুবদল নেতা দিলু আহমেদ জিলুকে গাড়ী চাপা দিয়ে হত্যা করা হয় বলে জানায় বিএনপি। সারাদেশে অসংখ্য নেতাকর্মী আহত ও গ্রেপ্তার হয়েছে।
অবরোধে শুরু থেকেই মাঠে ছিলো বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছেসেবক দল, কৃষকদল, শ্রমিক দল, ছাত্রদলসহ বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীরা। সারাদিনই দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক ও রেল পথে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে। পিকেটিং করে। বিভিন্ন জায়গা গাড়ি ভাংচুর ও গাড়িতে আগুন দেয়ার ঘটনাও ঘটে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, শান্তিপূর্ণ অবরোধ কর্মসূচিতে উন্মত্ত হায়েনার মতো হামলা চালিয়েছে পুলিশ। অস্ত্রসজ্জিত পুলিশ যে তান্ডবলীলা চালাচ্ছে, এটি কোনো সংঘর্ষ নয়, সুস্পষ্ট মানবাধিকার লঙ্ঘন। লক্ষ-লক্ষ গণতন্ত্রকামী মানুষের বিরুদ্ধে মুষ্টিমেয় কিছু অস্ত্রধারীর এই মানবাধিকার লঙ্ঘন দেশে-বিদেশে ধিকৃত।
তিনি বলেন, বিএনপির নিরস্ত্র নেতা-কর্মীদের উপর পরিকল্পিত আক্রমণ চালাচ্ছে পুলিশ-র্যাব-বিজিবির একটি উচ্ছিষ্টভোগী অংশ। আফগানিস্তানের যুদ্ধক্ষেত্রের মতো নির্বিচারে ও বেপরোয়াভাবে ব্যবহার করছে বুলেটের গুলি, টিয়ার শেল, লাঠি চার্জ, সাউন্ড গ্রেনেড, আর্মড ভেহিকল ও অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র। সশস্ত্র আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর গণবিরোধী আক্রমণে যুক্ত হয়েছে ছাত্রলীগ-যুবলীগের সন্ত্রাসী বাহিনী। আওয়ামী লীগের এই দুষ্কৃতিকারীরা আঘাত করছে স্টিলের পাইপ, লাঠিসোটা, বাঁশ, স্ট্যাম্প, হকিস্টিক, কাঠ ও চাপাতি দিয়ে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, যৌথভাবে আওয়ামী লীগ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী চালিয়ে যাচ্ছে আগুন সন্ত্রাস, পুড়াচ্ছে একের পর এক যানবাহন ও স্থাপনা। তাদের লক্ষ্য সবার কাছে পরিষ্কার, নিজেরা নানা দেশবিরোধী অঘটন ঘটিয়ে তার বেনিফিশিয়ারি হিসেবে বিএনপির সকল নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে গায়েবি মামলার প্রহসনমূলক গ্রেপ্তার ও রায় নিশ্চিত করা।
দেশে চলমান বিচারহীনতা, অপশাসন, সীমাহীন দুর্নীতি, অনাচার, অর্থ পাচার ও সিন্ডিকেটবাজীর ফলে দ্রব্যমূল্যের অব্যাহত ঊর্ধ্বগতিতে বিপর্যস্ত জনগণের জীবন জীবিকা রক্ষার স্বার্থে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার এক দফা দাবি আদায়ের লক্ষে আয়োজিত ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশে হামলা, নেতা-কর্মীদের হত্যা, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ আন্দোলনরত বিভিন্ন দলের সহস্রাধিক নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার, বাড়ি বাড়ি তল্লাশি, হয়রানি ও নির্যাতনের প্রতিবাদ এবং এক দফা দাবি আদায়ের লক্ষে আগামী ৩১ অক্টোবর থেকে নভেম্বর দেশব্যাপী সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি।
বিএনপির পাশাপাশি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, এলডিপি, এবি পার্টিসহ কয়েকটি দল ও জোট অবরোধ কর্মসূচি পালন ও সমর্থন করেছে।
যেদিন ট্রাম্পের সঙ্গে বাইডেন ডায়ালগ করবেন, সেদিন আমি করব: প্রধানমন্ত্রী
খুনিদের সঙ্গে কিসের সংলাপ, সে প্রশ্ন তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, সময়মতোই নির্বাচন হবে। কে চোখ রাঙাল আর কে চোখ বাঁকাল, তা নিয়ে পরোয়া করেন না। ব্রাসেলসে ‘গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরাম’ সম্মেলনে অংশগ্রহণের অভিজ্ঞতা জানাতে মঙ্গলবার বিকেলে গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে আসেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে প্রশ্নোত্তরে এ কথা বলেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূত শর্তহীনভাবে সংলাপের আশা প্রকাশ করেছেন। আপনি এটাকে কীভাবে দেখছেন?
জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘কার সঙ্গে সংলাপ? বিরোধী দলটা কে? বিরোধী দল হচ্ছে, যাদের সংসদে আসন আছে। এর বাইরেরগুলো আমেরিকায়ও বিরোধী দল হিসেবে দেখে না। ট্রাম্পকে তারা কী বলবে? তারা তো তাদের বিরোধী দল। যদিও আমরা তাদের পদ্ধতিতে না।’ এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে সহিংসতার ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘এই যে মানুষগুলো হত্যা করা হলো, তখন তাঁকে (পিটার হাস) প্রশ্ন করা হলো না কেন? যখন একটা উপনির্বাচনে হিরো আলমকে কেউ মেরেছে, তখন তাঁরা বিচার দাবি করেছে। এখন যখন পুলিশ হত্যা করল, সাংবাদিকদের ওপর হামলা করল তখন বিচার দাবি করল না কেন?’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যেভাবে পিটিয়ে পুলিশ হত্যা করেছে, এরপর খুনিদের সঙ্গে কিসের বৈঠক? কিসের আলোচনা? যারা এভাবে মানুষকে হত্যা করতে পারে, যারা উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ধ্বংস করতে পারে, তাদের সঙ্গে ডায়ালগ? সে বসে ডিনার খাক, সে বসে ডায়ালগ করুক। এটা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। খুনিদের সঙ্গে ডায়ালগ তার দেশের মানুষও চাইবে না। বিএনপি-জামায়াতকে মানুষ ঘৃণা করে। তাদের দুর্নীতির জন্য কানাডা থেকে লোক এসে সাক্ষ্য দিচ্ছে।’
২৮ অক্টোবরের ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘এখন তারা চুপ কেন? অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ মানবাধিকার সংস্থাগুলো এখন চুপ কেন? তাদের মানবিক বোধগুলো গেল কোথায়?’ দেশের বুদ্ধিজীবীরা চুপ কেন, সে প্রশ্নও তোলেন প্রধানমন্ত্রী। আরেক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, কোন বিদেশি শক্তি আমাদের রাজনীতিতে চোখ রাঙাচ্ছে? নির্বাচন নিয়ে নানাজন নানা মন্তব্য করছেন। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচন হবে এবং সময়মতোই হবে। কে চোখ রাঙাল আর কে চোখ বাঁকাল, ওটা নিয়ে পরোয়া করি না।’ দেশের উন্নয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শুধু ঢাকার উন্নয়ন নয়, গ্রামেও অনেক উন্নয়ন হয়েছে। ওই সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবেও সংলাপ নিয়ে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘যারা খুন করার পরও বলে, ডায়ালগ করতে হবে। কার সঙ্গে ডায়ালগ করতে হবে? ট্রাম্প সাহেবের সঙ্গে কি বাইডেন ডায়ালগ করতেছে? যেদিন ট্রাম্পের সঙ্গে বাইডেন ডায়ালগ করবেন, সেদিন আমি করব।’
সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনে থাকা বিএনপি ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশ আয়োজন করে। এ কর্মসূচি উপলক্ষে সারা দেশ থেকে দলটির নেতা–কর্মীরা নয়াপল্টন ও এর আশপাশের এলাকায় সমবেত হন। তবে ওই দিন বিএনপির নেতা–কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে পুলিশের এক সদস্য এবং বিএনপির অঙ্গসংগঠন যুবদলের এক নেতা নিহত হন। সংঘর্ষের কারণে বিএনপির মহাসমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়। পরদিন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুলিশের গ্রপ্তার অভিযানের মুখে আত্মগোপনে গেছেন দলটির জ্যেষ্ঠ নেতারা। এর মধ্যেই আজ থেকে সারা দেশে বিএনপির সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি শুরু হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে গিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের সঙ্গে বৈঠক করেন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। বৈঠক শেষ তিনি সাংবাদিকদের বলেন, গণতান্ত্রিক নির্বাচনে কোনো পক্ষের সংঘাতের জায়গা নেই। তিনি আশা করেন, বাংলাদেশে উদ্বেগ প্রশমন এবং একটি অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পথ খুঁজতে সব পক্ষ শর্তহীন সংলাপে বসবে। তাঁর এই বক্তব্যের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলন হয়।
জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ইসি কার্যালয়ের সচিব জাহাঙ্গীর আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ৪ নভেম্বর ৪৪টি দলের সঙ্গে কমিশন বসবে। জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে প্রস্তুতির ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোকে জানাতে এই সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে।
ইসি সচিব বলেন, সংলাপের জন্য দলগুলোর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বা তাদের নির্ধারণ করা দুই প্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ জানাবে নির্বাচন কমিশন। নিবন্ধিত সবগুলো দলকে দুই ভাগে সংলাপের জন্য ডাকা হবে।
নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা নিয়ে দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। বিএনপি চাইছে, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই নির্বাচন হতে হবে। অন্যদিকে বর্তমান সরকারের অধীনেই নির্বাচনের ব্যাপারে অনড় রয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এই ইস্যুতে বিএনপির চলমান আন্দোলনের মধ্যেই রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে সংলাপে বসার উদ্যোগের কথা জানাল ইসি।
আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নির্বাচনকে সামনে রেখে নিজেদের সাংগঠনিক সক্ষমতা ও জনমত পক্ষে টানতে কয়েক মাস ধরে সারা দেশে সমাবেশ ও পাল্টা-সমাবেশের কর্মসূচি দিচ্ছে।
সংবিধান অনুযায়ী সংসদের পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে ৯০ দিনের মধ্যে সংসদ নির্বাচন হতে হবে। বর্তমান সংসদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২৯ জানুয়ারি। হিসাব অনুযায়ী, ৯০ দিনের গণনা শুরু হবে ১ নভেম্বর থেকে।
নির্বাচন কমিশন নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে তফসিল ঘোষণা ও জানুয়ারির প্রথম দিকে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছে। এর আগে গত বছরের জুলাইয়ে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা তৈরির লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করে ইসি। তবে বিএনপি ও আটটি বিরোধী দল ওই সংলাপে অংশ নেয়নি। তারা বলছে, বর্তমান নির্বাচন কমিশনের পক্ষে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন সম্ভব নয়।
চলতি বছরের মার্চে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বিএনপিকে আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিক আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়ে আধা সরকারি চিঠি দিয়েছিলেন। তবে বিএনপি ওই আমন্ত্রণে সাড়া দেয়নি।
লেফট্যানেন্ট জেনারেল (অব.) হাসান সারওয়ার্দী গ্রেপ্তার
ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উপদেষ্টা পরিচয় দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করা মিয়ান আরেফীর বিরুদ্ধে পল্টন থানায় করা মামলায় অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা হাসান সারওয়ার্দীকে সাভারের একটি বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) বিকেলে এই গ্রেপ্তার অভিযানের নেতৃত্ব দেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। ডিবির এক কর্মকর্তা কালবেলাকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রোববার (২৯ অক্টোবর) রাতে মহিউদ্দিন শিকদার নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে এ মামলা করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পল্টন থানার ওসি মো. সালাহউদ্দীন মিয়া।
আসামিদের বিরুদ্ধে মিথ্যা পরিচয় দিয়ে অপরাধমূলক বিশ্বাস ভঙ্গের অভিযোগ এনেছেন বাদী।
এজাহারে বলা হয়েছে, শনিবার পূর্ব ঘোষিত মহাসমাবেশ উপলক্ষে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সারা দেশ থেকে দলটির নেতাকর্মীরা জড়ো হতে শুরু করেন। ওইদিন বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বিক্ষুব্ধ বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা কাকরাইল মোড় থেকে আরামবাগ মোড় পর্যন্ত পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়। তারা প্রধান বিচারপতির সরকারি বাসভবনসহ সরকারি স্থাপনা এবং সরকারি গাড়িসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ করে। এতে পুলিশের ৪১ সদস্য আহত ও এক সদস্য নিহত হন। একপর্যায়ে বিকেল ৩টার দিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা মহাসমাবেশ স্থগিত ঘোষণা করেন।
এজাহারে আরও বলা হয়, বিএনপির ওই কর্মকাণ্ডের পর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে হাসান সারওয়ার্দী এবং বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের নেতৃত্বে ২০ জন নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে কিছু সংবাদমাধ্যমের সামনে মিয়ান আরেফী নিজেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উপদেষ্টা পরিচয় দেন। পুলিশ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং আইন ও বিচার বিভাগের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে তার সরকারের কাছে সুপারিশ করেছেন বলে বক্তব্য দেন তিনি।
সেখানে মিয়ান আরেফী বক্তব্যে দাবি করেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তার দিনে ১০ থেকে ১৫ বার যোগাযোগ হয় এবং মার্কিন সরকারের সবাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে। তিনি আরও দাবি করেন, তিনি মার্কিন দূতাবাসের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরকেও বাংলাদেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেছেন।
এজাহারে বাদী অভিযোগ করেন, হাসান সারওয়ার্দী এবং ইশরাক হোসেন তাকে মিথ্যা বক্তব্য দিতে সহযোগিতা করেন এবং তার বক্তব্য সমর্থন করে বিএনপি নেতাকর্মীদের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতিতে উসকানি দেন। মিয়ান আরেফী তাদের সহায়তায় সরকারের প্রতি বিদ্বেষ সৃষ্টি করে সারা দেশে নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করেন।
এজাহারে বলা হয়, ওই সংবাদ সম্মেলনে একপর্যায়ে মিয়ান আরেফীর বক্তব্য শুনে এবং ভিডিও দেখে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি ঘটে।
বাদী অভিযোগ করেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের মনোবল বাড়াতে আসামিরা মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করতে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধ করেছেন।
আমেরিকার পাসপোর্টধারী মিয়ান আরেফীর প্রকৃত নাম মিয়া জাহিদুল ইসলাম আরেফী। তার জন্ম ও বেড়ে ওঠা সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায়। শনিবার বিএনপির কার্যালয়ে মিথ্যা পরিচয়ে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার পর রোববার বিকেলে তিনি দেশ ছাড়ার চেষ্টা করেন। তবে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ তাকে আটক করে ডিবি পুলিশের হাতে তুলে দেয়। এরই মধ্যে তিনি ডিবির কাছে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেছেন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।