ছাত্রলীগ নেতার ছুরিকাঘাতে ছাত্র আন্দোলনের জুনায়েদ নিহত, এলাকায় থমথমে পরিবেশ

নরসিংদীর মরজালে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা-কর্মীদের ছুরিকাঘাতে আহত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য জুনায়েদ আল হাবিব (২২) মারা গেছেন। ছুরিকাঘাতের ৯ দিন পর সোমবার (৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় চিকিৎসাধীন তার মৃত্যু হয়।
এদিকে জুনায়েদের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ায় মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সকাল থেকে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। নিহতের স্বজন ও স্থানীয়রা রাস্তায় নেমে আসে। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের মরজাল বাসষ্ট্যান্ডে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। ওই সময় তারা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করেন। একপর্যায়ে উত্তেজিতরা স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মী বাদলের দোকানে হামলা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। খবর পয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
নিহত জুনায়েদ নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার মরজাল ইউনিয়নের বটিয়ারা এলাকার মো. জসিম উদ্দিনের ছেলে ও স্থানীয় একটি কলেজের শিক্ষার্থী।
পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছে, গত ২৮ সেপ্টেম্বর উপজেলার বটিয়ারা মোড়ে জুনায়েদকে ছুরিকাঘাত করেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা স্বাধীন ও পিয়ালের নেতৃত্বে কয়েকজন। ছুরিকাঘাতে আহত জুনায়েদকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যালে পাঠানো হয়। টানা ৯ দিন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। সোমবার দুপুরে তার অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় আইসিইউতে ভর্তির পরামর্শ দেন চিকিৎসক। হাসপাতালে আইসিইউ খালি না থাকায় তাকে রাজধানীর গ্রিন লাইফ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে ভর্তির প্রস্তুতিকালে সোমবার সন্ধ্যায় তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ৩০ সেপ্টেম্বর জুনায়েদের চাচা মো. শফিক বাদী হয়ে স্বাধীন ও পিয়ালসহ ১৪ জনকে আসামি করে রায়পুরা থানায় মামলা করেন। পরে পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করে।
পরিবারের দাবি, ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেয়ায় স্থানীয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা-কর্মীরা জুনায়েদকে ছুরিকাঘাত করে। রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল জব্বার জানান, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে মাদক ব্যাবসার নিয়ন্ত্রণ নেয়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এর জেরে প্রতিপক্ষরা জুনায়েদ আল হাবিবকে ছুড়িকাঘাত করে। পরে চিকিৎসাধিন তার মৃত্যু হয়। এ খবরে এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক।