সাইয়ারা’র পর এবার বক্স অফিস কাঁপাচ্ছে রজনীর কুলি
জুলাই মাসে মোহিত সুরির ব্লকবাস্টার ছবি সাইয়ারা মুক্তির পর ভারতীয় বক্স অফিস যেন পুরোপুরি দখলে ছিল সেই ছবির। তখন অনেকেই ধারণা করেছিলেন, এত সহজে আর কোনো ছবি হয়তো তার অবস্থান টলাতে পারবে না। কিন্তু রজনীকান্ত যেন মঞ্চে প্রবেশের জন্য একটু অপেক্ষা করছিলেন। অবশেষে ১৪ আগস্ট মুক্তি পায় তাঁর বহু প্রতীক্ষিত সিনেমা কুলি, যা মাত্র ১৪ দিনের ব্যবধানে বিশ্বব্যাপী আয় করেছে ৫০১ কোটি রুপি!
চলতি বছরে ছাবা ও সাইয়ারা এর পর কুলি তৃতীয় ভারতীয় ছবি হিসেবে ৫০০ কোটির মাইলফলক অতিক্রম করল। সমালোচকদের মিশ্র প্রতিক্রিয়ার মুখে পড়লেও দর্শকপ্রিয়তায় ছবিটি কোনো ঘাটতি রাখেনি। ভারতে এ পর্যন্ত সিনেমাটির নেট আয় দাঁড়িয়েছে ২৬৮.৭৫ কোটি রুপি। যদিও ১৪তম দিনে আয় নেমে আসে মাত্র সাড়ে ৪ কোটিতে, তবুও সিনেমাটি ধীরে ধীরে ৩০০ কোটির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক বাজারে ছবিটি শুরু থেকেই দারুণ সাড়া ফেলেছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলোতে প্রথম সপ্তাহেই রেকর্ড আয় করে কুলি। এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক বাজার থেকে আয় হয়েছে প্রায় ১৮২ কোটি রুপি (২১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার)।
কুলি ইতিমধ্যেই অতিক্রম করেছে মণি রত্নমের পন্নিইন সেলভান,পার্ট ১ এর মোট আয় (৪৮৮ কোটি রুপি)। বর্তমানে ছবিটি সর্বকালের সর্বোচ্চ আয়কারী ভারতীয় সিনেমার শীর্ষ ২৫ এর মধ্যে রয়েছে এবং দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে ইতিমধ্যেই শীর্ষ ১০ এ জায়গা করে নিয়েছে। পরবর্তী লক্ষ্য, সাইয়ারা (৫৬৮ কোটি), পদ্মাবত (৫৮৫ কোটি) ও সঞ্জু (৫৮৮ কোটি) র আয় ছাড়িয়ে শীর্ষ ২০ এ প্রবেশ করা।
অ্যাকশন থ্রিলারধর্মী কুলি ছবিতে রজনীকান্তকে দেখা গেছে একজন অবসরপ্রাপ্ত কুলি ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতার চরিত্রে। বন্ধুর মৃত্যুর পর তিনি জড়িয়ে পড়েন একটি অপরাধচক্রের সঙ্গে।
ছবিতে আরও অভিনয় করেছেন নাগার্জুনা, শ্রুতি হাসান, সৌবিন শাহির, এবং অতিথি চরিত্রে উপেন্দ্র ও আমির খান।
দর্শকদের মধ্যে ছবিটি জনপ্রিয়তা পেলেও, সমালোচকদের অনেকেই ছবির চিত্রনাট্য ও নির্মাণ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। পরিচালক লোকেশ কঙ্গরাজের পূর্বের কাজের তুলনায় এই সিনেমাটিকে দুর্বল বলে মন্তব্য করেছেন অনেকে। তবে রজনীকান্তের ক্যারিশমা, অ্যাকশন ও স্টাইলের জন্য তারা প্রশংসা করেছেন।
টিজার মুক্তির এক সপ্তাহ পর সংগীত পরিচালক ইলইয়ারাজা নির্মাতাদের বিরুদ্ধে আইনি নোটিশ পাঠান। তাঁর অভিযোগ, ‘থাঙ্গা মাগন’ ছবির একটি গান অনুমতি ছাড়া টিজারে ব্যবহার করা হয়েছে। তবে মাদ্রাজ হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, গানটির গীতিকার ভিন্ন হওয়ায় ইলইয়ারাজা একক মালিকানা দাবি করতে পারেন না। ফলে বিতর্কও ধীরে ধীরে মুছে যায় আলোচনার কেন্দ্র থেকে।
‘কুলি’ এর সাফল্য প্রমাণ করছে, বয়স বা সমালোচনা কোনো কিছুই রজনীকান্তের তারকাখ্যাতিকে থামাতে পারে না। এখন দেখার পালা, ছবিটি ঠিক কোথায় গিয়ে থামে।