ঢাকা ০৩:৫৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ৫ কার্তিক ১৪৩২

মোদির টুইট ঘিরে বিতর্ক, নাকভির হাত থেকে ট্রফি না নিল ভারতীয় ক্রিকেটাররা

এশিয়া কাপের ফাইনালে পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারিয়ে শিরোপা জয় করেছে ভারত। ম্যাচ শেষে যেখানে আনন্দ ও উদযাপনের আবহ থাকার কথা ছিল, সেখানে তৈরি হয়েছে নতুন বিতর্ক ও কূটনৈতিক উত্তেজনা।

ম্যাচের পরপরই আলোচনায় আসে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি) সভাপতি ও পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি। তবে চ্যাম্পিয়ন দল ভারতের কোনো খেলোয়াড় ট্রফি গ্রহণ করতে নাকভির কাছে যাননি। এর ফলে নাকভির হাত থেকে ট্রফি না নিয়েই ভারতীয় ক্রিকেটাররা উদযাপনে মেতে ওঠেন।

ভারতীয় গণমাধ্যমের দাবি, পিসিবি সভাপতির হাত থেকে ট্রফি না নেওয়ার নির্দেশ ছিল ভারতের সরকারের পক্ষ থেকে। ট্রফি বিতরণ শেষে সেটি মঞ্চের ভেতরে নিয়ে যাওয়া হয় এবং নাকভি মঞ্চ ত্যাগ করার পর ভারতীয় দল ট্রফি ছাড়াই ছবি তোলে ও নিজেদের মতো করে জয় উদযাপন করে।

এর মধ্যে আরও বিতর্ক তৈরি হয় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এক্স (সাবেক টুইটার) পোস্ট ঘিরে। তিনি লেখেন‘খেলার মাঠেও অপারেশন সিঁদুর। ফলাফল একই ভারত বিজয়ী। আমাদের ক্রিকেটারদের শুভেচ্ছা।’

প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্যে সামরিক রেফারেন্স থাকায় বিষয়টি রাজনৈতিক রূপ নেয় এবং পাকিস্তানের পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়া আসতে সময় নেয়নি।

পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি পাল্টা মন্তব্যে বলেন, যদি যুদ্ধ হয় তোমাদের গর্বের মানদণ্ড, তবে ইতিহাসে পাকিস্তানের হাতে তোমাদের লজ্জাজনক পরাজয়ই লেখা আছে। কোনো ক্রিকেট ম্যাচই সেই সত্যকে মুছে ফেলতে পারে না। খেলায় যুদ্ধ টেনে আনা শুধুই হতাশার প্রকাশ, যা খেলাধুলার চেতনাকেই অপমান করে।

পুরস্কার বিতরণীতে রানার্সআপ পাকিস্তানের খেলোয়াড়দের পদক পরিয়ে দেন বিসিবির প্রতিনিধি আমিনুল ইসলাম বুলবুল। নাকভি ও আমিনুল একসঙ্গে রানার্সআপ চেক হস্তান্তর করেন। তবে ভারতের পক্ষ থেকে কেউ নাকভির কাছে যাননি, যা থেকেই বিতর্কের সূত্রপাত।

এশিয়া কাপের ট্রফি জয়ের মাধ্যমে ভারত ইতিহাস গড়লেও পরবর্তী বিতর্ক ও রাজনৈতিক ইঙ্গিতপূর্ণ আচরণে এই জয় আড়ালে চলে গেছে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। খেলাধুলার মঞ্চে রাজনীতি ও কূটনীতির ছায়া যেন আরও ঘনীভূত হচ্ছে ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্বে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

কালিয়াকৈরে ভুল রক্ত পুশে সিজারের রোগীর মৃত্যু

মোদির টুইট ঘিরে বিতর্ক, নাকভির হাত থেকে ট্রফি না নিল ভারতীয় ক্রিকেটাররা

আপডেট সময় : ১২:৪৭:৪১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

এশিয়া কাপের ফাইনালে পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারিয়ে শিরোপা জয় করেছে ভারত। ম্যাচ শেষে যেখানে আনন্দ ও উদযাপনের আবহ থাকার কথা ছিল, সেখানে তৈরি হয়েছে নতুন বিতর্ক ও কূটনৈতিক উত্তেজনা।

ম্যাচের পরপরই আলোচনায় আসে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি) সভাপতি ও পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি। তবে চ্যাম্পিয়ন দল ভারতের কোনো খেলোয়াড় ট্রফি গ্রহণ করতে নাকভির কাছে যাননি। এর ফলে নাকভির হাত থেকে ট্রফি না নিয়েই ভারতীয় ক্রিকেটাররা উদযাপনে মেতে ওঠেন।

ভারতীয় গণমাধ্যমের দাবি, পিসিবি সভাপতির হাত থেকে ট্রফি না নেওয়ার নির্দেশ ছিল ভারতের সরকারের পক্ষ থেকে। ট্রফি বিতরণ শেষে সেটি মঞ্চের ভেতরে নিয়ে যাওয়া হয় এবং নাকভি মঞ্চ ত্যাগ করার পর ভারতীয় দল ট্রফি ছাড়াই ছবি তোলে ও নিজেদের মতো করে জয় উদযাপন করে।

এর মধ্যে আরও বিতর্ক তৈরি হয় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এক্স (সাবেক টুইটার) পোস্ট ঘিরে। তিনি লেখেন‘খেলার মাঠেও অপারেশন সিঁদুর। ফলাফল একই ভারত বিজয়ী। আমাদের ক্রিকেটারদের শুভেচ্ছা।’

প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্যে সামরিক রেফারেন্স থাকায় বিষয়টি রাজনৈতিক রূপ নেয় এবং পাকিস্তানের পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়া আসতে সময় নেয়নি।

পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি পাল্টা মন্তব্যে বলেন, যদি যুদ্ধ হয় তোমাদের গর্বের মানদণ্ড, তবে ইতিহাসে পাকিস্তানের হাতে তোমাদের লজ্জাজনক পরাজয়ই লেখা আছে। কোনো ক্রিকেট ম্যাচই সেই সত্যকে মুছে ফেলতে পারে না। খেলায় যুদ্ধ টেনে আনা শুধুই হতাশার প্রকাশ, যা খেলাধুলার চেতনাকেই অপমান করে।

পুরস্কার বিতরণীতে রানার্সআপ পাকিস্তানের খেলোয়াড়দের পদক পরিয়ে দেন বিসিবির প্রতিনিধি আমিনুল ইসলাম বুলবুল। নাকভি ও আমিনুল একসঙ্গে রানার্সআপ চেক হস্তান্তর করেন। তবে ভারতের পক্ষ থেকে কেউ নাকভির কাছে যাননি, যা থেকেই বিতর্কের সূত্রপাত।

এশিয়া কাপের ট্রফি জয়ের মাধ্যমে ভারত ইতিহাস গড়লেও পরবর্তী বিতর্ক ও রাজনৈতিক ইঙ্গিতপূর্ণ আচরণে এই জয় আড়ালে চলে গেছে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। খেলাধুলার মঞ্চে রাজনীতি ও কূটনীতির ছায়া যেন আরও ঘনীভূত হচ্ছে ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্বে।