ঢাকা ০৩:০২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ৫ কার্তিক ১৪৩২

বিক্ষোভের জোয়ারে মরক্কো, তরুণদের দাবি মেটাতে সরকারের উদ্যোগ

ছবি : সংগৃহীত

মরক্কোর তরুণদের আন্দোলনে সরকারের পদক্ষেপের ধাক্কায় হতবাক অবস্থা। কয়েকদিন ধরে চলমান বিক্ষোভ দেশে সরকারবিরোধী গণজোয়ারের আগাম সংকেত হিসেবে ধরা পড়ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যাপক গণগ্রেপ্তার অভিযান চালাচ্ছে। একই সঙ্গে তরুণদের সঙ্গে আলোচনা ও দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে সরকার শান্তির চেষ্টা করছে। খবর এসেছে ডয়চে ভেলে ও মরক্কো ওয়ার্ল্ড নিউজ থেকে।

স্থানীয় অধিকার সংগঠন ও সংবাদ সংস্থাগুলোর বরাত দিয়ে জানা গেছে, টানা তৃতীয় দিনের বিক্ষোভের পর সোমবার মরক্কো পুলিশের অভিযান শুরু হয়। রাস্তাঘাট, বাড়ি ও অফিস থেকে কয়েক ডজন বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়। পুলিশ দাবি করেছে, আটককৃতরা শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিল। তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর মতে, এই গণগ্রেপতার মাধ্যমে সরকার নতুন বিক্ষোভ দমনে আগ্রাসী হচ্ছে।

রাজধানী রাবাত, কাসাব্লাঙ্কাসহ আগাদির, টাঙ্গিয়ার ও ওজদা শহরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার দেখা মেলেছে। সপ্তাহান্তে বিক্ষোভের জন্য অনলাইনে আহ্বান প্রচারিত হওয়ার পর থেকে প্রশাসন তরুণদের একত্রিত হওয়া ঠেকাতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

এএফপি ও রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাবাতে পুলিশ স্লোগান দেওয়ার বা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করার সময় বেশ কয়েক ডজন তরুণকে আটক করেছে।

মরক্কোর বৃহত্তম শহর কাসাব্লাঙ্কায় রোববার রাতে বিক্ষোভকারীরা প্রধান সড়ক অবরোধ করে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে, পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের কাছে শিক্ষার্থীদের জোরপূর্বক ছত্রভঙ্গ করছে। মরক্কো মানবাধিকার সমিতির রাবাত শাখার সভাপতি হাকিম সিকুক জানান, আটককৃতদের অধিকাংশকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে, তবে অনেকেই নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এদিকে, মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) মরক্কোর সরকার তরুণদের দাবি শোনার জন্য সংলাপের সিদ্ধান্ত নেয়। পাশাপাশি স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সামাজিক সেবার উন্নয়নে প্রয়োজনীয় কাজের প্রস্তুতি নেওয়ার কথা জানায়।

সরকারের এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক শেষে জানানো হয়, অনলাইন ও পাবলিক জায়গায় প্রকাশিত তরুণদের দাবিগুলো মনোযোগ দিয়ে পর্যালোচনা করা হবে এবং প্রয়োগযোগ্য দাবি বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।

জেন-জির-২১২ এবং মরোক্কান ইয়ুথ ভয়েসসহ বিভিন্ন তরুণ গোষ্ঠীর নেতৃত্বে বিক্ষোভের ঢেউ অন্তত ১১টি শহরে ছড়িয়ে পড়েছে। তরুণরা মূলত স্বাস্থ্যসেবা, ক্রমবর্ধমান বৈষম্য ও দুর্বল শিক্ষা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করছে। দিন দিন তাদের আন্দোলনে বিভিন্ন বয়সের মানুষও অংশ নিচ্ছেন।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

কালিয়াকৈরে ভুল রক্ত পুশে সিজারের রোগীর মৃত্যু

বিক্ষোভের জোয়ারে মরক্কো, তরুণদের দাবি মেটাতে সরকারের উদ্যোগ

আপডেট সময় : ০১:৩২:৫২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ অক্টোবর ২০২৫

মরক্কোর তরুণদের আন্দোলনে সরকারের পদক্ষেপের ধাক্কায় হতবাক অবস্থা। কয়েকদিন ধরে চলমান বিক্ষোভ দেশে সরকারবিরোধী গণজোয়ারের আগাম সংকেত হিসেবে ধরা পড়ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যাপক গণগ্রেপ্তার অভিযান চালাচ্ছে। একই সঙ্গে তরুণদের সঙ্গে আলোচনা ও দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে সরকার শান্তির চেষ্টা করছে। খবর এসেছে ডয়চে ভেলে ও মরক্কো ওয়ার্ল্ড নিউজ থেকে।

স্থানীয় অধিকার সংগঠন ও সংবাদ সংস্থাগুলোর বরাত দিয়ে জানা গেছে, টানা তৃতীয় দিনের বিক্ষোভের পর সোমবার মরক্কো পুলিশের অভিযান শুরু হয়। রাস্তাঘাট, বাড়ি ও অফিস থেকে কয়েক ডজন বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়। পুলিশ দাবি করেছে, আটককৃতরা শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিল। তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর মতে, এই গণগ্রেপতার মাধ্যমে সরকার নতুন বিক্ষোভ দমনে আগ্রাসী হচ্ছে।

রাজধানী রাবাত, কাসাব্লাঙ্কাসহ আগাদির, টাঙ্গিয়ার ও ওজদা শহরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার দেখা মেলেছে। সপ্তাহান্তে বিক্ষোভের জন্য অনলাইনে আহ্বান প্রচারিত হওয়ার পর থেকে প্রশাসন তরুণদের একত্রিত হওয়া ঠেকাতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

এএফপি ও রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাবাতে পুলিশ স্লোগান দেওয়ার বা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করার সময় বেশ কয়েক ডজন তরুণকে আটক করেছে।

মরক্কোর বৃহত্তম শহর কাসাব্লাঙ্কায় রোববার রাতে বিক্ষোভকারীরা প্রধান সড়ক অবরোধ করে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে, পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের কাছে শিক্ষার্থীদের জোরপূর্বক ছত্রভঙ্গ করছে। মরক্কো মানবাধিকার সমিতির রাবাত শাখার সভাপতি হাকিম সিকুক জানান, আটককৃতদের অধিকাংশকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে, তবে অনেকেই নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এদিকে, মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) মরক্কোর সরকার তরুণদের দাবি শোনার জন্য সংলাপের সিদ্ধান্ত নেয়। পাশাপাশি স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সামাজিক সেবার উন্নয়নে প্রয়োজনীয় কাজের প্রস্তুতি নেওয়ার কথা জানায়।

সরকারের এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক শেষে জানানো হয়, অনলাইন ও পাবলিক জায়গায় প্রকাশিত তরুণদের দাবিগুলো মনোযোগ দিয়ে পর্যালোচনা করা হবে এবং প্রয়োগযোগ্য দাবি বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।

জেন-জির-২১২ এবং মরোক্কান ইয়ুথ ভয়েসসহ বিভিন্ন তরুণ গোষ্ঠীর নেতৃত্বে বিক্ষোভের ঢেউ অন্তত ১১টি শহরে ছড়িয়ে পড়েছে। তরুণরা মূলত স্বাস্থ্যসেবা, ক্রমবর্ধমান বৈষম্য ও দুর্বল শিক্ষা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করছে। দিন দিন তাদের আন্দোলনে বিভিন্ন বয়সের মানুষও অংশ নিচ্ছেন।