দীর্ঘ ৯০৯ দিন পর অবশেষে নিজের ঐতিহ্যবাহী ঘর ক্যাম্প ন্যুতে ফিরল বার্সেলোনা। আর ফিরে এসেই যেন নতুন ইতিহাস লিখল কাতালানরা ম্যাচ শুরুর মাত্র ৪ মিনিটের মাথায় রবার্ট লেভানডোভস্কির গোল, এরপর ফেরান তোরেস ও ফারমিন লোপেজের ঝলকে অ্যাথলেটিক বিলবাওকে উড়িয়ে দিল ৪–০ ব্যবধানে। স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে ফিরে এলো বার্সার সেই হারানো গর্জন, পরিপূর্ণ হলো অপেক্ষার দীর্ঘ সময়।

ম্যাচের শুরুটা ছিল রূপকথার মতো ২০ সেকেন্ডেই প্রথম আক্রমণ, আর চতুর্থ মিনিটে লিড। গালেরেত্তার ভুল থেকে বল পেয়ে এরিক গার্সিয়ার পাসে নিকট পোস্টে শট নেন লেভানডোভস্কি। উনাই সিমোন থামাতে পারতেন, কিন্তু ক্যাম্প ন্যুর আবেগে যেন স্থির থাকতে পারেননি বিলবাও গোলরক্ষক।

দীর্ঘদিনের অনুপস্থিতির প্রভাব মাঠে পড়ার কথা থাকলেও বার্সা শুরুতেই দেখিয়ে দেয় নিজেদের ঘরে ফিরলে তারা আগের চেয়েও ছন্দময়।

প্রথমার্ধের শেষ দিকে যখন বিলবাও কিছুটা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছিল, ঠিক তখনই লামিন ইয়ামালের লং পাস ধরে গোলমুখে ঢুকে ফেরান তোরেস। তার শট সিমোনের হাত পায়ে লেগে জালে জড়ালে ব্যবধান দ্বিগুণ হয়ে যায়। বিরতির আগের গোলটি বিলবাওয়ের আশা পুরোপুরি নিভিয়ে দেয়।

দ্বিতীয়ার্ধেও বার্সার আধিপত্য অটুট থাকে। আবারও গালেরেত্তার ভুল, আর সুযোগ হাতছাড়া না করে নিখুঁত শটে ফারমিন লোপেজ করেন ৩–০। এরপরই আসে ম্যাচের বড় টার্নিং পয়েন্ট ক্ষোভে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফারমিনকে লাথি মারেন সানসেট, এবং সরাসরি লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় তাকে।

দশ জনের বিলবাও তখন সম্পূর্ণ ছন্দহারা। বার্সা আরও কয়েকটি গোলের সুযোগ তৈরি করলেও কাজে লাগাতে পারেনি। তবে ইনজুরি টাইমে ফেরান তোরেস তার দ্বিতীয় গোলটি করে ৪–০ ব্যবধান নিশ্চিত করেন। দুই মাস পর মাঠে ফিরে রাফিনিয়াও দর্শকদের করতালিতে সিক্ত হন।

দেড় বছরেরও বেশি সময় পর ক্যাম্প ন্যুতে বার্সার প্রত্যাবর্তন ছিল এক আবেগঘন রাত। স্পটিফাইয়ের ‘সাউন্ডট্র্যাক’ এ সাজানো নতুন স্টেডিয়াম আর বার্সার সুরেলা ফুটবল যেন পুরো ম্যাচজুড়ে এক মুগ্ধতা ছড়িয়ে দেয় যেখানে বার্সা খেলেছে সুরে, বিলবাও ছিল পুরোপুরি বেসুরো। স্কোরলাইনই তার প্রমাণ।