
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বহু প্রতীক্ষিত রাকসু (রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ) ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ৯টায়। কোনো বিরতি ছাড়াই এই ভোটগ্রহণ চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। এরপর শুরু হবে ভোট গণনা এবং ফলাফল ঘোষণা করা হবে একই দিন।
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পুরো ক্যাম্পাসে নেওয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় মোতায়েন করা হয়েছে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনীর সদস্য।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. এফ নজরুল ইসলাম জানান, এবার কেন্দ্রীয় ২৩টি পদে ৩০৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়া সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি ৫টি পদে ৫৮ জন এবং ১৭টি আবাসিক হলের মোট ২৫৫টি পদের জন্য ৫৫৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সব মিলিয়ে মোট ৪৩টি পদে ৯১৮ জন প্রার্থী নির্বাচন লড়াইয়ে আছেন।
নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ২৮ হাজার ৯০১ জন। এর মধ্যে ছাত্রী ভোটার রয়েছেন ১১ হাজার ৩০৫ জন এবং ছাত্র ভোটার ১৭ হাজার ৫৯৫ জন। প্রতিটি ভোটারকে ৪৩টি পদে ভোট দেওয়ার সুযোগ থাকছে এবং এজন্য গড়ে ১০ মিনিট সময় বরাদ্দ থাকবে। প্রতি ভোটের জন্য সময় ধরা হয়েছে গড়ে ১৪ সেকেন্ড।
এবারই প্রথম রাকসু সিনেট ও হল সংসদ নির্বাচন হচ্ছে আবাসিক হলের বাইরে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ৯টি একাডেমিক ভবনে ৯৯০টি বুথে শিক্ষার্থীরা ভোট দিচ্ছেন। প্রতিটি হলের জন্য আলাদা ভবন নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।
যেমন, সৈয়দ ইসমাঈল হোসেন সিরাজী ভবনে ভোট দিচ্ছেন রোকেয়া ও জুলাই-৩৬ হলের শিক্ষার্থীরা। মমতাজ উদ্দিন কলা ভবনে ভোট দিচ্ছেন মন্নুজান হলের শিক্ষার্থীরা। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভবনে তাপসী রাবেয়া, বেগম খালেদা জিয়া ও রহমতুন্নেসা হলের ভোটাররা ভোট দিচ্ছেন। এছাড়া অন্যান্য ভবনেও নির্ধারিত হলগুলোর ভোটারদের জন্য পৃথক কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে।
ভোটারদের জন্য নির্বাচন কমিশন কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা জারি করেছে। প্রত্যেক ভোটারকে অবশ্যই শিক্ষার্থী পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখতে হবে। অন্য কেন্দ্রের ভোটারদের প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ভোট দেয়ার আগে তালিকায় নিজের নাম ও কেন্দ্র যাচাই করতে হবে। আঙুলে অমোচনীয় কালি দিয়ে তবেই ভোট দেওয়া যাবে।
ভোটারদের শান্তিপূর্ণভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। সাইনপেন দিয়ে নির্ধারিত ঘরে প্রার্থীর নামের পাশে ক্রস চিহ্ন দিয়ে ভোট দিতে হবে। ভোট দেওয়ার পর ভোটকেন্দ্রের আশেপাশে অবস্থান করা যাবে না। ভোটকেন্দ্রে কোনো প্রচারণা, ভীতি প্রদর্শন, বিশৃঙ্খলা কিংবা ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ।
ভোট শেষ হবে বিকেল ৪টায়। তবে যাঁরা চারটার মধ্যে কেন্দ্রের চত্বরে প্রবেশ করবেন, তাঁরা ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবেন। নির্বাচন কমিশনের আশা, একজন ভোটার নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই ভোট প্রদান শেষ করতে পারবেন।
ভোট গণনা করা হবে ছয়টি অপটিক্যাল মার্ক রিকগনিশন (ওএমআর) মেশিনের মাধ্যমে। বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বড় এলইডি স্ক্রিনে ফল গণনার দৃশ্য সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। সবশেষে কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা হবে। ভোট গণনার পুরো প্রক্রিয়া থাকবে সিসি ক্যামেরার আওতায়।