
চট্টগ্রাম ইপিজেডে শ্রমিক বিক্ষোভের জেরে প্যাসিফিক গ্রুপের আটটি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে মালিকপক্ষ এই সিদ্ধান্ত জানায়। শনিবার থেকে কার্যকর হবে এ সিদ্ধান্ত। বন্ধ থাকা কারখানাগুলো হলো প্যাসিফিক জিন্স-১, প্যাসিফিক জিন্স-২, প্যাসিফিক অ্যাটায়ারস, প্যাসিফিক অ্যাক্সেসরিজ, প্যাসিফিক ওয়ারকওয়্যারস, ইউনিভার্সেল জিন্স, এইচটি ফ্যাশন ও জিন্স ২০০০।
প্যাসিফিক গ্রুপের চিফ অপারেটিং অফিসার সুহৃদ চৌধুরী জানান, বৃহস্পতিবার শ্রমিক বিক্ষোভের পর কারখানাগুলোতে প্রথমে সাময়িক ছুটি ঘোষণা করা হয়। পরে মালিকপক্ষ বৈঠক করে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়।
বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ইপিজেডের বিভিন্ন সেক্টরে প্যাসিফিক গ্রুপের কারখানাগুলোর সামনে শ্রমিকরা বিক্ষোভ করে। এ সময় উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। অভিযোগ রয়েছে, বিক্ষোভ চলাকালে কিছু শ্রমিক কারখানার কর্মকর্তাদের মারধর করেন।
গ্রুপের এক কর্মকর্তা বলেন, গত কয়েকদিন ধরেই শ্রমিকরা বিক্ষোভ চালিয়ে আসছিলেন। বৃহস্পতিবার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। কয়েকজন কর্মকর্তা শারীরিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন। রাতে আমাদের কাছে কারখানা বন্ধের নোটিস আসে।
মালিকপক্ষের জারি করা নোটিসে বলা হয়, কিছু শ্রমিক ১৪ অক্টোবর থেকে কাজ বন্ধ করে বেআইনিভাবে কর্মবিরতি পালন করেন। কর্তৃপক্ষ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে কাজে যোগ দিতে নির্দেশ দিলেও তারা তা উপেক্ষা করেন এবং ১৫ ও ১৬ অক্টোবরও উচ্ছৃঙ্খল আচরণ অব্যাহত রাখেন। একপর্যায়ে শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও কর্মকর্তাদের ওপর হামলার ঘটনাও ঘটে।
নোটিসে আরও বলা হয়, শ্রমিকদের এই আচরণ বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইন-২০১৯ অনুযায়ী বেআইনি ধর্মঘটের শামিল। ফলে শ্রমিকদের বাধার কারণে কারখানার স্বাভাবিক কার্যক্রম চালু রাখা সম্ভব হচ্ছে না।
এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ২২ দফা দাবিকে কেন্দ্র করে প্যাসিফিক গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান প্যাসিফিক ক্যাজুয়াল লিমিটেডের শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেছিল। সে সময় সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে এবং মালিকপক্ষ দুটি ইউনিট বন্ধ করে দেয়। পরে শ্রমিকরা মুচলেকা দিয়ে কাজে ফিরে আসেন।
সম্প্রতি, ৯ অক্টোবর কিছু শ্রমিক পুলিশের হয়রানির অভিযোগে বিক্ষোভ করেন। এরপর ১৪ ও ১৫ অক্টোবর ধারাবাহিকভাবে কয়েকটি কারখানায় আন্দোলন হলেও বড় কোনো সংঘর্ষ হয়নি। তবে বৃহস্পতিবারের বিক্ষোভে তা তীব্র আকার ধারণ করে, এবং কর্মকর্তাদের মারধরের ঘটনাও ঘটে