ঢাকা ০৩:২১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ৫ কার্তিক ১৪৩২

বাংলাদেশে ইউএন-হ্যাবিট্যাটের উপস্থিতি বাড়ানোর আহ্বান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের

জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর জন্য টেকসই ও সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসন নিশ্চিত করতে বাংলাদেশে জাতিসংঘ-হ্যাবিট্যাটের উপস্থিতি জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ-হ্যাবিট্যাটের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ও নির্বাহী পরিচালক আনাক্লাউদিয়া রসবাখের সঙ্গে এক বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূস এই আহ্বান জানান।

বৈঠকে তারা শহরাঞ্চলে সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসন, টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, ক্ষুদ্র ঋণভিত্তিক আবাসন প্রকল্প এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “বাংলাদেশে ঘন ঘন বন্যা, নদী ভাঙন ও ঘূর্ণিঝড়ের ফলে প্রতিবছর হাজার হাজার মানুষ তাদের ঘরবাড়ি হারাচ্ছেন। এ প্রেক্ষাপটে আমাদের জরুরিভাবে টেকসই, সাশ্রয়ী এবং নব উদ্ভাবনী আবাসন সমাধান প্রয়োজন।”

তিনি উদ্ভাবনী ডিজাইনের উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন, এমন ছাদ নির্মাণ যা বন্যার সময় নৌকার মতো ব্যবহারযোগ্য হতে পারে। পাশাপাশি, তিনি নারীবান্ধব আবাসন ডিজাইনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন, যা নারী সদস্যদের দৈনন্দিন জীবনকে আরও সহজ ও নিরাপদ করে তুলবে।

বৈঠকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য টেকসই আবাসনের জরুরি প্রয়োজনীয়তাও তুলে ধরা হয়। এই বিষয়ে ইউনূস জাতিসংঘ হ্যাবিট্যাটকে আসন্ন রোহিঙ্গা সংকটবিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলনে অংশ নেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানান।

অধ্যাপক ইউনূস আরও প্রস্তাব করেন, জাতিসংঘ-হ্যাবিট্যাট ওয়ার্ল্ড আরবান ফোরাম প্রতি বছর একটি জলবায়ু সহনশীল ও সাশ্রয়ী আবাসন বিষয়ক বৈশ্বিক ডিজাইন প্রতিযোগিতা আয়োজন করুক, যা বিভিন্ন অঞ্চলের বাস্তব চাহিদা পূরণে উদ্ভাবনী সমাধান উৎসাহিত করবে।

নির্বাহী পরিচালক আনাক্লাউদিয়া রসবাখ এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানান এবং জানান যে, সংস্থা রোহিঙ্গা সংকট সম্মেলনে অংশ নিতে আগ্রহী। তিনি আগামী মাসগুলোতে বাংলাদেশের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের জন্য গৃহায়ন ও শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খানের আমন্ত্রণের প্রতি ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন।

রসবাখ আরও বলেন, “বাংলাদেশের মতো জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ দেশে ইউএন-হ্যাবিট্যাটের শক্তিশালী উপস্থিতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।” তিনি অধ্যাপক ইউনূসকে আগামী জিরো ওয়েস্ট ফোরাম (১৭–১৯ অক্টোবর, ইস্তানবুল) এবং পরবর্তী ওয়ার্ল্ড আরবান ফোরাম (বাকু, আজারবাইজান) এ অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানান।

আলোচনায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকেও একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রাধিকার হিসেবে তুলে ধরা হয়। বিশেষ করে শহর ও বস্তি এলাকায় টেকসই প্রযুক্তিনির্ভর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তা জোর দিয়ে উল্লেখ করা হয়।

বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন, গৃহায়ন ও শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুটফে সিদ্দিকী, এসডিজি সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

কালিয়াকৈরে ভুল রক্ত পুশে সিজারের রোগীর মৃত্যু

বাংলাদেশে ইউএন-হ্যাবিট্যাটের উপস্থিতি বাড়ানোর আহ্বান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের

আপডেট সময় : ১১:৫৮:০৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর জন্য টেকসই ও সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসন নিশ্চিত করতে বাংলাদেশে জাতিসংঘ-হ্যাবিট্যাটের উপস্থিতি জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ-হ্যাবিট্যাটের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ও নির্বাহী পরিচালক আনাক্লাউদিয়া রসবাখের সঙ্গে এক বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূস এই আহ্বান জানান।

বৈঠকে তারা শহরাঞ্চলে সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসন, টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, ক্ষুদ্র ঋণভিত্তিক আবাসন প্রকল্প এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “বাংলাদেশে ঘন ঘন বন্যা, নদী ভাঙন ও ঘূর্ণিঝড়ের ফলে প্রতিবছর হাজার হাজার মানুষ তাদের ঘরবাড়ি হারাচ্ছেন। এ প্রেক্ষাপটে আমাদের জরুরিভাবে টেকসই, সাশ্রয়ী এবং নব উদ্ভাবনী আবাসন সমাধান প্রয়োজন।”

তিনি উদ্ভাবনী ডিজাইনের উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন, এমন ছাদ নির্মাণ যা বন্যার সময় নৌকার মতো ব্যবহারযোগ্য হতে পারে। পাশাপাশি, তিনি নারীবান্ধব আবাসন ডিজাইনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন, যা নারী সদস্যদের দৈনন্দিন জীবনকে আরও সহজ ও নিরাপদ করে তুলবে।

বৈঠকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য টেকসই আবাসনের জরুরি প্রয়োজনীয়তাও তুলে ধরা হয়। এই বিষয়ে ইউনূস জাতিসংঘ হ্যাবিট্যাটকে আসন্ন রোহিঙ্গা সংকটবিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলনে অংশ নেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানান।

অধ্যাপক ইউনূস আরও প্রস্তাব করেন, জাতিসংঘ-হ্যাবিট্যাট ওয়ার্ল্ড আরবান ফোরাম প্রতি বছর একটি জলবায়ু সহনশীল ও সাশ্রয়ী আবাসন বিষয়ক বৈশ্বিক ডিজাইন প্রতিযোগিতা আয়োজন করুক, যা বিভিন্ন অঞ্চলের বাস্তব চাহিদা পূরণে উদ্ভাবনী সমাধান উৎসাহিত করবে।

নির্বাহী পরিচালক আনাক্লাউদিয়া রসবাখ এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানান এবং জানান যে, সংস্থা রোহিঙ্গা সংকট সম্মেলনে অংশ নিতে আগ্রহী। তিনি আগামী মাসগুলোতে বাংলাদেশের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের জন্য গৃহায়ন ও শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খানের আমন্ত্রণের প্রতি ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন।

রসবাখ আরও বলেন, “বাংলাদেশের মতো জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ দেশে ইউএন-হ্যাবিট্যাটের শক্তিশালী উপস্থিতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।” তিনি অধ্যাপক ইউনূসকে আগামী জিরো ওয়েস্ট ফোরাম (১৭–১৯ অক্টোবর, ইস্তানবুল) এবং পরবর্তী ওয়ার্ল্ড আরবান ফোরাম (বাকু, আজারবাইজান) এ অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানান।

আলোচনায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকেও একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রাধিকার হিসেবে তুলে ধরা হয়। বিশেষ করে শহর ও বস্তি এলাকায় টেকসই প্রযুক্তিনির্ভর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তা জোর দিয়ে উল্লেখ করা হয়।

বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন, গৃহায়ন ও শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুটফে সিদ্দিকী, এসডিজি সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ