ঢাকা ১১:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫, ৫ কার্তিক ১৪৩২

ডিম-মুরগি উৎপাদন বন্ধের হুমকি, ৭ দফা দাবি বিপিএ’র

ছবি : সংগৃহীত

ফিড, বাচ্চা ও ওষুধের দাম অযৌক্তিকভাবে বাড়ানোর প্রতিবাদে সারা দেশে ডিম ও মুরগি উৎপাদন বন্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছে বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)। শনিবার (১৮ অক্টোবর) রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন সংগঠনের নেতারা।

সংগঠনের সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, সরকার যদি আমাদের ৭ দফা দাবি মেনে না নেয়, তাহলে আমরা প্রান্তিক খামারিরা খামার বন্ধ করতে বাধ্য হব। যতদিন দাবি মানা না হবে, ততদিন আমরা উৎপাদন বন্ধ রাখব।

তিনি বলেন, দেশের ডিম ও মুরগির মোট উৎপাদনের প্রায় ৮০ শতাংশই আসে প্রান্তিক খামারিদের কাছ থেকে, অথচ তাদের কোনো নীতিনির্ধারণী ভূমিকা নেই। কয়েকটি বড় কর্পোরেট কোম্পানি নিজেদের স্বার্থে সিদ্ধান্ত নিয়ে এই খাতের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। এর ফলে বহু খামার বন্ধ হয়ে গেছে।

প্রেস কনফারেন্সে বলা হয়, ভারতে যেখানে একটি ডিমের দাম ৫ টাকা ও প্রতি কেজি মুরগির দাম ৮০–৯০ টাকা, সেখানে বাংলাদেশে ডিম ১০ টাকা এবং মুরগি ১৫০–১৬৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অথচ প্রান্তিক খামারিরা অনেক কম দামে বিক্রি করেও লোকসান গুনছেন।

সুমন হাওলাদার আরও জানান, ২০২৩ সালে ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে প্রতি কেজি ফিডে ১৫–২০ টাকা অতিরিক্ত নেওয়া হচ্ছে, যা খরচ বাড়িয়ে দিচ্ছে। এতে একটি ব্রয়লার মুরগি উৎপাদনে খরচ পড়ে ১৫০–১৬৫ টাকা, অথচ বিক্রি করতে হচ্ছে ১৩০–১৪০ টাকায়।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খন্দকার লিখিত বক্তব্যে ৭ দফা দাবি তুলে ধরেন:

ফিড, বাচ্চা, ওষুধ ও ভ্যাকসিনের দাম সরকার নির্ধারণ করবে; কর্পোরেট সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে।

কর্পোরেট প্রভাবমুক্ত, ন্যায্য ও স্বচ্ছ বাজার ব্যবস্থা গঠন।

নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে প্রান্তিক খামারিদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা।

ফিড, বাচ্চা ও ওষুধের বাজারে নিয়মিত অডিট ও নজরদারি চালু করা।

উৎপাদন খরচের সঙ্গে ১০% মুনাফা যোগ করে ডিম ও মুরগির ন্যায্য মূল্য নির্ধারণ।

ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের জন্য প্রণোদনা, জামানতবিহীন ঋণ ও ভর্তুকির ব্যবস্থা।

দুর্নীতিগ্রস্ত ও কর্পোরেটপন্থী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা।

সংগঠনটি সরকারকে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানায়, অন্যথায় সারাদেশে খামার বন্ধ করে ডিম-মুরগি উৎপাদন স্থগিতের কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

কালিয়াকৈরে ভুল রক্ত পুশে সিজারের রোগীর মৃত্যু

ডিম-মুরগি উৎপাদন বন্ধের হুমকি, ৭ দফা দাবি বিপিএ’র

আপডেট সময় : ০৩:৩৩:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫

ফিড, বাচ্চা ও ওষুধের দাম অযৌক্তিকভাবে বাড়ানোর প্রতিবাদে সারা দেশে ডিম ও মুরগি উৎপাদন বন্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছে বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)। শনিবার (১৮ অক্টোবর) রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন সংগঠনের নেতারা।

সংগঠনের সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, সরকার যদি আমাদের ৭ দফা দাবি মেনে না নেয়, তাহলে আমরা প্রান্তিক খামারিরা খামার বন্ধ করতে বাধ্য হব। যতদিন দাবি মানা না হবে, ততদিন আমরা উৎপাদন বন্ধ রাখব।

তিনি বলেন, দেশের ডিম ও মুরগির মোট উৎপাদনের প্রায় ৮০ শতাংশই আসে প্রান্তিক খামারিদের কাছ থেকে, অথচ তাদের কোনো নীতিনির্ধারণী ভূমিকা নেই। কয়েকটি বড় কর্পোরেট কোম্পানি নিজেদের স্বার্থে সিদ্ধান্ত নিয়ে এই খাতের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। এর ফলে বহু খামার বন্ধ হয়ে গেছে।

প্রেস কনফারেন্সে বলা হয়, ভারতে যেখানে একটি ডিমের দাম ৫ টাকা ও প্রতি কেজি মুরগির দাম ৮০–৯০ টাকা, সেখানে বাংলাদেশে ডিম ১০ টাকা এবং মুরগি ১৫০–১৬৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অথচ প্রান্তিক খামারিরা অনেক কম দামে বিক্রি করেও লোকসান গুনছেন।

সুমন হাওলাদার আরও জানান, ২০২৩ সালে ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে প্রতি কেজি ফিডে ১৫–২০ টাকা অতিরিক্ত নেওয়া হচ্ছে, যা খরচ বাড়িয়ে দিচ্ছে। এতে একটি ব্রয়লার মুরগি উৎপাদনে খরচ পড়ে ১৫০–১৬৫ টাকা, অথচ বিক্রি করতে হচ্ছে ১৩০–১৪০ টাকায়।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খন্দকার লিখিত বক্তব্যে ৭ দফা দাবি তুলে ধরেন:

ফিড, বাচ্চা, ওষুধ ও ভ্যাকসিনের দাম সরকার নির্ধারণ করবে; কর্পোরেট সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে।

কর্পোরেট প্রভাবমুক্ত, ন্যায্য ও স্বচ্ছ বাজার ব্যবস্থা গঠন।

নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে প্রান্তিক খামারিদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা।

ফিড, বাচ্চা ও ওষুধের বাজারে নিয়মিত অডিট ও নজরদারি চালু করা।

উৎপাদন খরচের সঙ্গে ১০% মুনাফা যোগ করে ডিম ও মুরগির ন্যায্য মূল্য নির্ধারণ।

ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের জন্য প্রণোদনা, জামানতবিহীন ঋণ ও ভর্তুকির ব্যবস্থা।

দুর্নীতিগ্রস্ত ও কর্পোরেটপন্থী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা।

সংগঠনটি সরকারকে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানায়, অন্যথায় সারাদেশে খামার বন্ধ করে ডিম-মুরগি উৎপাদন স্থগিতের কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়।