
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলায় নিখোঁজের দুই দিন পর এক মাদ্রাসাছাত্রের বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় চর চান্দড়া গ্রামে মতিয়ার শেখের বাড়ির পাশের একটি পুকুর থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত কিশোরের নাম মো. আমির হামজা, যিনি হানযালা নামে পরিচিত। বয়স ১৩ বছর। তিনি স্থানীয় চান্দড়া তালিমুল কোরআন মাদ্রাসা ও এতিমখানার জামাত খানার দ্বিতীয় জামাতের ছাত্র ছিলেন।
স্থানীয়রা জানান, মতিয়ার শেখের স্ত্রী হাঁস আনতে গিয়ে পুকুরে একটি বস্তা ভাসতে দেখে সন্দেহ প্রকাশ করেন। বস্তা থেকে দুর্গন্ধ বের হলে তিনি চিৎকার করেন। পরে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। রাত ৮টার দিকে আলফাডাঙ্গা থানা পুলিশ বস্তাটি পুকুর থেকে উদ্ধার করে। খুলে দেখা যায়, ভেতরে একটি কিশোরের মরদেহ।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, লাশটি অর্ধগলিত অবস্থায় ছিল এবং মুখে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। বস্তার ভেতরে ইটও পাওয়া গেছে, যা মরদেহটিকে পানির নিচে ডুবিয়ে রাখার জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে এটিকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড হিসেবে সন্দেহ করা হচ্ছে।
মাদ্রাসার মোহতামিম মাওলানা আমিনুল্লাহ জানান, রোববার আছরের নামাজের পর হানযালা রুম থেকে কিছু নিয়ে বের হয়। এরপর থেকে তার আর কোনো খোঁজ মেলেনি। দুদিন ধরে মাইকিং করে খোঁজ করা হয়, কিন্তু কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
নিহতের বাবা সাইরুদ্দিন, যিনি উপজেলার শুকুরহাটা গ্রামের বাসিন্দা, কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার তিন মেয়ে, একমাত্র ছেলে ছিল হানযালা। কী অপরাধে আমার শিশুটাকে এমনভাবে হত্যা করা হলো? আমি খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
তিনি জানান, রোববার বিকেল থেকে ছেলেকে খুঁজে না পেয়ে সোমবার আলফাডাঙ্গা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। তদন্তের দায়িত্ব পান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শহিদুল ইসলাম। পরে লাশ উদ্ধারের সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে এসে ছেলের মরদেহ শনাক্ত করেন।
আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহজালাল আলম বলেন, মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে ধারণা করা হচ্ছে। সম্ভবত হত্যার পর লাশ পুকুরে ফেলে রাখা হয়েছিল। তদন্ত চলছে, অপরাধীদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।