ঢাকা ০৪:৩৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৪ কার্তিক ১৪৩২

সাভারের বিশ্ববিদ্যালয় সংঘর্ষ: অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটে ২০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার সাভারে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ ও সিটি ইউনিভার্সিটিতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সাভার মডেল থানায় দায়ের হওয়া দুটি পৃথক মামলায় ১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ১,২৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

সিটি ইউনিভার্সিটিতে হামলা, শিক্ষার্থীদের মারধর, ভাঙচুর, চুরি ও বিস্ফোরক ব্যবহার করে অগ্নিসংযোগের অভিযোগে মঙ্গলবার দিবাগত রাত সোয়া ১২টায় মামলা দায়ের করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মীর আকতার হোসেন। অপরদিকে, ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের অবৈধভাবে আটক করে মারধর ও ক্ষতিসাধনের অভিযোগে আরেকটি মামলা দায়ের করেছেন সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা আফতাব উদ্দিন আহম্মেদ খান। দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস সাভারের আশুলিয়ার খাগান এলাকায় অবস্থিত।

সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জুয়েল মিঞা বলেন, “সিটি ইউনিভার্সিটি ও ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটি পৃথকভাবে মামলা করেছে। সিটি ইউনিভার্সিটির মামলায় ১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ১,০০০ জনকে আসামি করা হয়েছে, আর ড্যাফোডিলের মামলায় অজ্ঞাতনামা ২৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।”

সিটি ইউনিভার্সিটির এজাহারে বলা হয়েছে, গত রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সিটি ইউনিভার্সিটির এক ছাত্রের উপরে ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির ফাহাদ নামের ছাত্রের থুতু পড়ে। ঘটনাটি নিয়ে বিবাদ শুরু হলে রাত ১২টা ৪০ মিনিটের দিকে ফাহাদসহ অজ্ঞাত এক হাজারাধিক শিক্ষার্থী অস্ত্রসহ সিটি ইউনিভার্সিটির মেইন ফটকের দিকে সমবেত হন। তারা সিকিউরিটি গার্ডকে আঘাত করে, মূল ফটক দিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে ব্যর্থ হলে পাশের দেয়াল ভেঙে প্রবেশ করে। পরে পেট্রলবোমা ও হাতবোমা ফেলে, ছাত্রছাত্রীদের পরিবহনের ৫টি বাস ভাঙচুর ও ৩টি বাস, ৩টি মাইক্রোবাস, ১টি প্রাইভেট কার এবং ২টি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।

হামলাকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে ভাঙচুর ও লুটপাট করে গুরুত্বপূর্ণ নথি ও জিনিসপত্র পুড়িয়ে দেয়। হিসাব শাখা থেকে আনুমানিক ১৫ লাখ টাকা চুরি করা হয়। প্রাথমিক ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ২০ কোটি টাকা। হামলার সময় সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা বাধা দিতে গেলে তাদের মারধর করা হয়। শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হন।

ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির দায়ের করা মামলায় বলা হয়েছে, রাত ৯টার দিকে সিটি ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থী ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীর উপর থুতু ফেলে। এর উত্তরে সিটি ইউনিভার্সিটির একদল ছাত্র অস্ত্র, ইটপাটকেল ও লাঠিসোঁটা নিয়ে ‘ব্যাচেলর প্যারাডাইস’ হোস্টেলে ঢুকে ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীদের মারধর ও ভাঙচুর করে। হামলায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন, যাদের মধ্যে অনেকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

উপরের তথ্য অনুসারে, সংঘর্ষ ও হামলার পেছনে ছোট ঘটনা কেন্দ্রবিন্দু হলেও পরিস্থিতি দ্রুত ভয়াবহ আকার নিয়েছে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

কালিয়াকৈরে তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নে লিফলেট বিতরণ

সাভারের বিশ্ববিদ্যালয় সংঘর্ষ: অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটে ২০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি

আপডেট সময় : ০৪:৫৭:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫

ঢাকার সাভারে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ ও সিটি ইউনিভার্সিটিতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সাভার মডেল থানায় দায়ের হওয়া দুটি পৃথক মামলায় ১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ১,২৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

সিটি ইউনিভার্সিটিতে হামলা, শিক্ষার্থীদের মারধর, ভাঙচুর, চুরি ও বিস্ফোরক ব্যবহার করে অগ্নিসংযোগের অভিযোগে মঙ্গলবার দিবাগত রাত সোয়া ১২টায় মামলা দায়ের করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মীর আকতার হোসেন। অপরদিকে, ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের অবৈধভাবে আটক করে মারধর ও ক্ষতিসাধনের অভিযোগে আরেকটি মামলা দায়ের করেছেন সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা আফতাব উদ্দিন আহম্মেদ খান। দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস সাভারের আশুলিয়ার খাগান এলাকায় অবস্থিত।

সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জুয়েল মিঞা বলেন, “সিটি ইউনিভার্সিটি ও ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটি পৃথকভাবে মামলা করেছে। সিটি ইউনিভার্সিটির মামলায় ১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ১,০০০ জনকে আসামি করা হয়েছে, আর ড্যাফোডিলের মামলায় অজ্ঞাতনামা ২৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।”

সিটি ইউনিভার্সিটির এজাহারে বলা হয়েছে, গত রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সিটি ইউনিভার্সিটির এক ছাত্রের উপরে ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির ফাহাদ নামের ছাত্রের থুতু পড়ে। ঘটনাটি নিয়ে বিবাদ শুরু হলে রাত ১২টা ৪০ মিনিটের দিকে ফাহাদসহ অজ্ঞাত এক হাজারাধিক শিক্ষার্থী অস্ত্রসহ সিটি ইউনিভার্সিটির মেইন ফটকের দিকে সমবেত হন। তারা সিকিউরিটি গার্ডকে আঘাত করে, মূল ফটক দিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে ব্যর্থ হলে পাশের দেয়াল ভেঙে প্রবেশ করে। পরে পেট্রলবোমা ও হাতবোমা ফেলে, ছাত্রছাত্রীদের পরিবহনের ৫টি বাস ভাঙচুর ও ৩টি বাস, ৩টি মাইক্রোবাস, ১টি প্রাইভেট কার এবং ২টি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।

হামলাকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে ভাঙচুর ও লুটপাট করে গুরুত্বপূর্ণ নথি ও জিনিসপত্র পুড়িয়ে দেয়। হিসাব শাখা থেকে আনুমানিক ১৫ লাখ টাকা চুরি করা হয়। প্রাথমিক ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ২০ কোটি টাকা। হামলার সময় সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা বাধা দিতে গেলে তাদের মারধর করা হয়। শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হন।

ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির দায়ের করা মামলায় বলা হয়েছে, রাত ৯টার দিকে সিটি ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থী ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীর উপর থুতু ফেলে। এর উত্তরে সিটি ইউনিভার্সিটির একদল ছাত্র অস্ত্র, ইটপাটকেল ও লাঠিসোঁটা নিয়ে ‘ব্যাচেলর প্যারাডাইস’ হোস্টেলে ঢুকে ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীদের মারধর ও ভাঙচুর করে। হামলায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন, যাদের মধ্যে অনেকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

উপরের তথ্য অনুসারে, সংঘর্ষ ও হামলার পেছনে ছোট ঘটনা কেন্দ্রবিন্দু হলেও পরিস্থিতি দ্রুত ভয়াবহ আকার নিয়েছে।