
গাজায় চলমান মানবিক সংকট ও হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদ স্বরূপ স্পেন আরও একটি অস্ত্রচুক্তি বাতিল করেছে ইসরায়েলের সঙ্গে। ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যম হারেৎজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাতিল হওয়া এই চুক্তির মোট মূল্য ২০৭ মিলিয়ন ইউরো। এটি স্পেনের পক্ষ থেকে তৃতীয় বড় অস্ত্রচুক্তি বাতিলের ঘটনা।
এর আগে এই মাসের শুরুতেই মাদ্রিদ প্রায় ৭০০ মিলিয়ন ইউরো মূল্যের ইসরায়েলের রকেট লঞ্চার ক্রয় চুক্তি বাতিল করেছিল। স্পেন সরকার জানিয়েছে, এসব পদক্ষেপ তাদের বিস্তৃত নীতির অংশ, যার লক্ষ্য ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অস্ত্র চুক্তি নিষিদ্ধকরণ এবং গাজায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত দেশগুলোর ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বৃদ্ধি করা।
স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ ইতোমধ্যে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘গাজায় চলমান হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করতে স্পেন বিদ্যমান প্রতিরক্ষা চুক্তি নিষিদ্ধকরণ আইনকে শক্তিশালী করবে এবং ইসরায়েলের সঙ্গে নতুন কোনো অস্ত্র চুক্তি করবে না।’
৯ সেপ্টেম্বর স্পেন সরকার ২৮৭.৫ মিলিয়ন ইউরো মূল্যের আরেকটি চুক্তি বাতিল করেছিল, যেখানে ১৬৮টি অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক মিসাইল লঞ্চার স্পেনে ইসরায়েলের লাইসেন্সের অধীনে উৎপাদিত হওয়ার কথা ছিল। এসব পদক্ষেপ স্পেনের নীতিকে আরও দৃঢ় করেছে এবং ইসরায়েলের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
গত মঙ্গলবার মন্ত্রিসভার সভায় সব ধরনের ইসরায়েল সম্পর্কিত প্রতিরক্ষা সামগ্রী, প্রযুক্তি ও পণ্যের আমদানি-রপ্তানি স্থগিত রেখে সম্পূর্ণ অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা অনুমোদন করা হয়। অর্থমন্ত্রী কার্লোস কুয়ের্পো বলেন, ‘এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে একটি উদ্ভাবনী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত, যা ইসরায়েলের ওপর ব্যাপক অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে।’
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, স্পেনের এই পদক্ষেপ গাজার মানবিক সংকটের প্রতি আন্তর্জাতিক মনোযোগ আকর্ষণ এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক চাপ বৃদ্ধির একটি শক্তিশালী ও সুস্পষ্ট বার্তা বহন করছে। তারা বলেন, এটি শুধু প্রতিরক্ষা নীতির পরিবর্তন নয়, বরং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার রক্ষা ও সংঘাত নিয়ন্ত্রণে স্পেনের কূটনৈতিক ভূমিকাকে শক্তিশালী করার প্রতিফলন।