
স্বাস্থ্য সচেতনতা এখন সময়ের বড় ট্রেন্ড। শহরের করপোরেট পেশাজীবী থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী প্রায় সবাই ফিট থাকার চেষ্টা করছেন। কেউ নিয়মিত যাচ্ছেন জিমে, কেউবা মেনে চলছেন ডায়েট প্ল্যান। তবে সম্প্রতি একটা বিষয় অনেকের মধ্যে দেখা যাচ্ছে ওজন কমানোর শর্টকাট উপায় হিসেবে রাতের খাবার পুরোপুরি বাদ দেওয়া।
কিন্তু আদৌ কি এটা কার্যকর? না কি অজান্তেই শরীরের ক্ষতি করছেন আপনি? এই প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন রাজধানীর লাইফ কেয়ার মেডিকেল সেন্টার অ্যান্ড বিডিএন পল্লবী ডায়াবেটিস সেন্টারের পুষ্টিবিদ ইসরাত জাহান ডরিন।
পুষ্টিবিদ ডরিন জানান, রাতে না খাওয়ার অর্থ দাঁড়ায় সন্ধ্যার নাশতা থেকে পরদিন সকালের নাশতা পর্যন্ত প্রায় ১২–১৪ ঘণ্টা না খেয়ে থাকা। এতে শরীরে শক্তির ঘাটতি দেখা দেয়, ফলে সকালে ক্লান্তিভাব, মাথাব্যথা, মনোযোগের অভাব এবং কাজের প্রতি আগ্রহ কমে যেতে পারে। এছাড়া খালি পেটে দীর্ঘ সময় থাকলে অ্যাসিডিটির সমস্যা বেড়ে যায়, গ্যাস হতে পারে এবং দীর্ঘমেয়াদে আলসারের ঝুঁকি পর্যন্ত তৈরি হয়।
সবচেয়ে বড় বিষয়, না খেয়ে থাকার ফলে শরীরের বিপাক প্রক্রিয়া ধীর হয়ে যায়। তখন শরীর ওজন কমানোর বদলে চর্বি জমাতে শুরু করে ফলে ফলাফল হয় সম্পূর্ণ উল্টো। এ প্রশ্নের জবাবে পুষ্টিবিদ ডরিন বলেন, “রাতের খাবার বাদ দেওয়া কখনই স্বাস্থ্যসম্মত পদ্ধতি নয়। বরং শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী হালকা, সহজপাচ্য ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উচিত।”
পুষ্টিবিদের পরামর্শ অনুযায়ী, রাতের খাবারে রাখা যেতে পারে:
১। ১–২টি রুটি বা অল্প পরিমাণ ভাত
২। সঙ্গে সবজি, সালাদ ও লো ফ্যাট প্রোটিন যেমন: সিদ্ধ ডিম, মাছ, চিকেন ইত্যাদি
৩। চাইলে ফলের সালাদ বা স্যুপও খাওয়া যেতে পারে
৪। তবে এড়িয়ে চলতে হবে ভাজাভুজি, অতিরিক্ত তেল-মসলাযুক্ত ও হেভি খাবার। এবং রাত ৯টার পর খাওয়াদাওয়া না করাই ভালো।
রাতের খাবার বাদ না দিয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণে আনতে চাইলে পুষ্টিবিদ ডরিনের ৪টি পরামর্শ অনুসরণ করতে পারেন:
১। নিয়মিত ব্যায়াম বা হাঁটা
২। পর্যাপ্ত ঘুম
৩। সময়মতো ও পরিমিত খাবার গ্রহণ
৪। প্রোটিন, ফাইবার ও ভিটামিনযুক্ত খাবার খাওয়ার অভ্যাস
ওজন কমানো বা সুস্থ থাকতে গেলে নিজের শরীর ও জীবনযাত্রার সঙ্গে মানানসই একটি সঠিক ডায়েট প্ল্যান তৈরি করা জরুরি। যেটা একজন পুষ্টিবিদের পরামর্শে হলে সবচেয়ে ভালো হয়।
স্মরণে রাখুন, শরীরকে না খাইয়ে ওজন কমানো যায় না বরং সঠিকভাবে খেয়েই সুস্থ থাকা যায়।