
চট্টগ্রাম জেলার সর্বত্র নিরাপদ পানি ও আধুনিক স্যানিটেশন নিশ্চিত করতে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড হাতে নিয়েছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। এরই মধ্যে হাজারো গভীর নলকূপ, ওয়াশব্লক, টয়লেট ও পানি সরবরাহ প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে দৃশ্যমান পরিবর্তন এসেছে। ফলে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
সূত্র জানায়, সারাদেশে নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায় প্রায় ২৫ হাজার সাবমার্সিবল পাম্পযুক্ত গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে। জলস্তরের নিচে নেমে যাওয়া ও নদী-নালা শুকিয়ে যাওয়ায় পানি সংকট তীব্র হয়ে উঠলেও এই উদ্যোগে জনগণ এখন বিশুদ্ধ পানির সুযোগ পাচ্ছে।
বিশেষত সীতাকুন্ড উপজেলায় মাটির নিচে পাথরের স্তর থাকায় দীর্ঘদিন ধরে পানি সংকট চরম আকার ধারণ করে। তবে আধুনিক Hydraulic Rig প্রযুক্তি ব্যবহার করে সেখানে গভীর নলকূপ স্থাপনের ফলে স্থানীয়দের সুপেয় পানির চাহিদা মিটেছে।
একই সঙ্গে পাহাড়ি এলাকা ও বিচ্ছিন্ন দ্বীপ সন্দ্বীপেও প্রতিকূল পরিবেশে স্থাপন করা হয়েছে ওয়াশব্লক ও গভীর নলকূপ। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের জন্য ৬০০ ওয়াশব্লক ও ১,১৩৫টি গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে। ফলে শিক্ষার্থীদের আর বাইরে থেকে পানি আনতে হচ্ছে না।
মানবসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রাম জেলায় ১৪ হাজার ৭০০টি টুইনপিট ল্যাট্রিন নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া চলছে ৫টি বৃহৎ পাইপড ওয়াটার সাপ্লাই স্কিম এবং ২৬৬টি ক্ষুদ্র পাইপড স্কিম, যার প্রতিটিতে ৩০–৪০ পরিবার বিশুদ্ধ পানি পাচ্ছে।
চট্টগ্রামের উপকূলীয় অঞ্চলে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় নির্মিত হয়েছে ৬,৩৩৬টি রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিং সিস্টেম এবং ৬৩০টি রেইন ওয়াটার ক্যাচমেন্ট এরিয়া। এতে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত পানির সংকট মোকাবেলায় সহায়তা পাচ্ছে উপকূলীয় জনগণ।
এছাড়া সাতকানিয়া পৌরসভায় নির্মিত হয়েছে ৪০টি কমিউনিটি ও পাবলিক টয়লেট, ৪৭টি কমিউনিটি বিন, ড্রেন ও ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট। বাঁশখালী ও চন্দনাইশ পৌরসভায় ইমপ্রুভড হাউসহোল্ড টয়লেট ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার কাজও চলছে। খুব শিগগিরই এসব এলাকায় পানি সরবরাহ কার্যক্রম শুরু হবে।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে নানান চ্যালেঞ্জ ছিল। তবে একের পর এক প্রকল্প সফলভাবে শেষ হওয়ায় চট্টগ্রাম এখন নিরাপদ পানি ও আধুনিক স্যানিটেশনের ক্ষেত্রে একটি রোল মডেলে পরিণত হচ্ছে।