
আমার ছেলে হাসপাতালের আইসিইউতে যতটুকু প্রাণশক্তি ছিল, তা দিয়েই জিকির করেছে। আমি বেডের পাশে দাঁড়িয়ে শুনেছি, সে কী বলছে। তার প্রতিটি নিঃশ্বাসে ছিল জিকিরের ধ্বনি। তখন আমি আল্লাহর দরবারে বলেছিলাম হে আল্লাহ, যদি আমার ছেলের আর হায়াত না থাকে, তবে তাকে ইমানের সঙ্গে কবুল করে নিন। ত্বকী জিকির করতে করতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছে।’
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) রাতে বিশ্বজয়ী হাফেজ সাইফুর রহমান ত্বকীর জানাজার আগে উপস্থিত মানুষের সামনে এভাবেই কথা বলেন তাঁর বাবা মাওলানা বদিউল আলম।
তিনি আরও বলেন, ‘আমার ছেলের জন্য সবাই দোয়া করবেন। আমি জানি, সে কেমন জীবন যাপন করেছে ইসলামের নিয়ম মেনে চলেছে। তার মৃত্যুতে কষ্ট পেয়েছি, কিন্তু আমি জানি আমার রবের সন্তুষ্টিই সবচেয়ে বড় বিষয়। আমি দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ে দোয়া করেছি। নিজ হাতে তাকে সাদা কাপড়ে মুড়িয়ে বাড়ি এনেছি, লাশ কাঁধে নিয়েছি এই আশায় যে তাকে জান্নাতে পৌঁছে দেব।’
এর আগে মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ডালপা নেদায়ে ইসলাম দাখিল মাদ্রাসা মাঠে জানাজা শেষে উত্তরপাড়া পীরমুড়ি কবরস্থানে ত্বকীর দাফন সম্পন্ন হয়।
স্বজনরা জানান, সম্প্রতি ত্বকী ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর মুগদা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। মঙ্গলবার সকালে তিনি সেখানে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
হাফেজ সাইফুর রহমান ত্বকী মারকাযুত তাহফিজ থেকে হিফজ সম্পন্ন করেন এবং এই প্রতিষ্ঠান থেকে একাধিকবার কোরআন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন। বর্তমানে তিনি নারায়ণগঞ্জের একটি মাদ্রাসায় কিতাব বিভাগে অধ্যয়নরত ছিলেন।
তিনি জর্ডান, কুয়েত ও বাহরাইনের আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের হয়ে অংশ নিয়ে বিজয় অর্জন করেন। এছাড়া এনটিভিতে প্রচারিত ‘কোরআনের আলো’ অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন জাতীয় প্রতিযোগিতায়ও তিনি বিজয়ী হন।
২০০০ সালে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ডালপা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ত্বকী। তাঁর বাবা মাওলানা বদিউল আলম একজন মাদ্রাসা শিক্ষক। পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে ত্বকী ছিলেন সবার বড়।
ডেস্ক নিউজ/নিউজ টুডে 

























