ঢাকা ০৪:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ৬ কার্তিক ১৪৩২

বৃষ্টিকে পুঁজি করে বাড়ানো হয়েছে সবজি-তেল-ডালের দাম, ভোগান্তিতে ক্রেতারা

গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিকে অজুহাত বানিয়ে রাজধানীর খুচরা বাজারে ফের বাড়ানো হয়েছে সবজি, ভোজ্যতেল ও ডালের দাম। সরবরাহে কোনো ঘাটতি না থাকলেও অসাধু ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে কেজিপ্রতি ১০-২০ টাকা পর্যন্ত দাম বাড়িয়েছে অনেক পণ্যের। ফলে বাজারে গিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন সাধারণ ক্রেতারা।

সবজির বাজারে আগুন

বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সব ধরনের সবজির দাম গত সপ্তাহের তুলনায় বেড়েছে। যেমন:

  • বরবটি: প্রতি কেজি ৮০-৮৫ টাকা (আগে ৭০-৮০ টাকা)

  • ঢ্যাঁড়শ: ৮০ টাকা (আগে ৬০-৭০ টাকা)

  • ঝিঙা: ৭০-৮০ টাকা (আগে ৬০-৭০ টাকা)

  • লাউ (প্রতি পিস): ৬০-৭০ টাকা (আগে ৪০-৫০ টাকা)

  • সিম: কেজি ২০০ টাকা

  • কচুর লতি: ৮০-১০০ টাকা

  • কাঁকরোল: ৮০ টাকা

  • পেঁপে: ৪০ টাকা

  • কুমড়া: ৪০-৫০ টাকা

  • গাজর: ১২০ টাকা

  • পটোল: ৮০ টাকা

  • মুলা: ৭০ টাকা

  • শসা: ৬০-৭০ টাকা

  • ফুলকপি (প্রতি পিস): ৫০ টাকা

  • আলু: ৩০ টাকা কেজি

বৃষ্টির অজুহাত, বাস্তবে বাজারে পণ্যের ঘাটতি নেই

নয়াবাজারে সবজি কিনতে আসা ক্রেতা মো. শাকিল বলেন, “বৃষ্টি হলেই বিক্রেতারা দাম বাড়িয়ে দেয়। অথচ বাজারে সরবরাহ ঠিকই আছে। এটা সাধারণ মানুষের সঙ্গে অন্যায়।”

বিক্রেতারা অবশ্য দায় দিচ্ছেন আড়তের দিকে। সবজি বিক্রেতা মো. আল আমিন বলেন, “আড়তে দাম বাড়ায়, তাই আমাদেরও বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। বৃষ্টি চলতে থাকলে দাম আরও বাড়তে পারে।”

ভোজ্যতেল ও ডালের দামেও ঊর্ধ্বগতি

বাজারে সয়াবিন ও পাম তেলের দামও বেড়েছে। বৃহস্পতিবার দুই লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হয়েছে ৩৮০-৩৮৫ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৩৭৫-৩৮০ টাকা। পাম তেল লিটারপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৬৮ টাকায় (আগে ১৬৫ টাকা)।

ডালের বাজারেও অস্থিরতা:

  • মাঝারি দানার মসুর ডাল: ১২০-১৪০ টাকা (আগে ১১০ টাকা)

  • ছোট দানার মসুর: ১৫০-১৬০ টাকা (আগে ১৪০ টাকা)

  • বড় দানার মসুর: ১০০-১১০ টাকা

ক্রেতা নাজমুল বলেন, “সরকার তেলের দাম বাড়ায়নি, অথচ দোকানে এসে দেখি দাম বেশি। কেউ দেখছে না এসব।”

মাছ-মাংসেও আগুন

মাংস ও মাছের বাজারেও লাগামহীন দাম:

  • ব্রয়লার মুরগি: ১৮০ টাকা (আগে ১৭০ টাকা)

  • সোনালি মুরগি: ২৮০ টাকা (আগে ২৬০ টাকা)

  • গরুর মাংস: ৭৫০-৮০০ টাকা

  • খাসির মাংস: ১১০০-১২০০ টাকা

  • ফার্ম ডিম (ডজন): ১৪০ টাকা

মাছের দাম:

  • মাঝারি ইলিশ: ২৩০০-২৫০০ টাকা

  • ৭০০-৮০০ গ্রাম ইলিশ: ১৭০০-১৮০০ টাকা

  • ছোট ইলিশ: ৭০০-৭৫০ টাকা

  • রুই: ৩৫০-৪০০ টাকা

  • তেলাপিয়া: ২৫০ টাকা

  • পাঙাশ: ২২০-২৫০ টাকা

  • পাবদা: ৪০০-৪৫০ টাকা

  • টেংরা: ৮০০ টাকা

  • চিংড়ি: ১০০০ টাকা

সবজির সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে দাম বাড়াচ্ছে, যা ভোক্তাদের জন্য চরম ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রয়োজন তদারকির, নইলে এই অস্থিরতা চলতেই থাকবে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

আইয়ুব বাচ্চুর সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে চট্টগ্রামে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন

বৃষ্টিকে পুঁজি করে বাড়ানো হয়েছে সবজি-তেল-ডালের দাম, ভোগান্তিতে ক্রেতারা

আপডেট সময় : ০৪:২১:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ অক্টোবর ২০২৫

গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিকে অজুহাত বানিয়ে রাজধানীর খুচরা বাজারে ফের বাড়ানো হয়েছে সবজি, ভোজ্যতেল ও ডালের দাম। সরবরাহে কোনো ঘাটতি না থাকলেও অসাধু ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে কেজিপ্রতি ১০-২০ টাকা পর্যন্ত দাম বাড়িয়েছে অনেক পণ্যের। ফলে বাজারে গিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন সাধারণ ক্রেতারা।

সবজির বাজারে আগুন

বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সব ধরনের সবজির দাম গত সপ্তাহের তুলনায় বেড়েছে। যেমন:

  • বরবটি: প্রতি কেজি ৮০-৮৫ টাকা (আগে ৭০-৮০ টাকা)

  • ঢ্যাঁড়শ: ৮০ টাকা (আগে ৬০-৭০ টাকা)

  • ঝিঙা: ৭০-৮০ টাকা (আগে ৬০-৭০ টাকা)

  • লাউ (প্রতি পিস): ৬০-৭০ টাকা (আগে ৪০-৫০ টাকা)

  • সিম: কেজি ২০০ টাকা

  • কচুর লতি: ৮০-১০০ টাকা

  • কাঁকরোল: ৮০ টাকা

  • পেঁপে: ৪০ টাকা

  • কুমড়া: ৪০-৫০ টাকা

  • গাজর: ১২০ টাকা

  • পটোল: ৮০ টাকা

  • মুলা: ৭০ টাকা

  • শসা: ৬০-৭০ টাকা

  • ফুলকপি (প্রতি পিস): ৫০ টাকা

  • আলু: ৩০ টাকা কেজি

বৃষ্টির অজুহাত, বাস্তবে বাজারে পণ্যের ঘাটতি নেই

নয়াবাজারে সবজি কিনতে আসা ক্রেতা মো. শাকিল বলেন, “বৃষ্টি হলেই বিক্রেতারা দাম বাড়িয়ে দেয়। অথচ বাজারে সরবরাহ ঠিকই আছে। এটা সাধারণ মানুষের সঙ্গে অন্যায়।”

বিক্রেতারা অবশ্য দায় দিচ্ছেন আড়তের দিকে। সবজি বিক্রেতা মো. আল আমিন বলেন, “আড়তে দাম বাড়ায়, তাই আমাদেরও বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। বৃষ্টি চলতে থাকলে দাম আরও বাড়তে পারে।”

ভোজ্যতেল ও ডালের দামেও ঊর্ধ্বগতি

বাজারে সয়াবিন ও পাম তেলের দামও বেড়েছে। বৃহস্পতিবার দুই লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হয়েছে ৩৮০-৩৮৫ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৩৭৫-৩৮০ টাকা। পাম তেল লিটারপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৬৮ টাকায় (আগে ১৬৫ টাকা)।

ডালের বাজারেও অস্থিরতা:

  • মাঝারি দানার মসুর ডাল: ১২০-১৪০ টাকা (আগে ১১০ টাকা)

  • ছোট দানার মসুর: ১৫০-১৬০ টাকা (আগে ১৪০ টাকা)

  • বড় দানার মসুর: ১০০-১১০ টাকা

ক্রেতা নাজমুল বলেন, “সরকার তেলের দাম বাড়ায়নি, অথচ দোকানে এসে দেখি দাম বেশি। কেউ দেখছে না এসব।”

মাছ-মাংসেও আগুন

মাংস ও মাছের বাজারেও লাগামহীন দাম:

  • ব্রয়লার মুরগি: ১৮০ টাকা (আগে ১৭০ টাকা)

  • সোনালি মুরগি: ২৮০ টাকা (আগে ২৬০ টাকা)

  • গরুর মাংস: ৭৫০-৮০০ টাকা

  • খাসির মাংস: ১১০০-১২০০ টাকা

  • ফার্ম ডিম (ডজন): ১৪০ টাকা

মাছের দাম:

  • মাঝারি ইলিশ: ২৩০০-২৫০০ টাকা

  • ৭০০-৮০০ গ্রাম ইলিশ: ১৭০০-১৮০০ টাকা

  • ছোট ইলিশ: ৭০০-৭৫০ টাকা

  • রুই: ৩৫০-৪০০ টাকা

  • তেলাপিয়া: ২৫০ টাকা

  • পাঙাশ: ২২০-২৫০ টাকা

  • পাবদা: ৪০০-৪৫০ টাকা

  • টেংরা: ৮০০ টাকা

  • চিংড়ি: ১০০০ টাকা

সবজির সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে দাম বাড়াচ্ছে, যা ভোক্তাদের জন্য চরম ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রয়োজন তদারকির, নইলে এই অস্থিরতা চলতেই থাকবে।