
ক্যারিবীয় সাগরে মাদক বহনকারী সন্দেহে একটি নৌযানে বিমান হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে নৌকাটিতে থাকা অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ।
স্থানীয় সময় শুক্রবার (৩ অক্টোবর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে এই তথ্য নিশ্চিত করেন তিনি। পোস্টে হামলার একটি ভিডিও-ও প্রকাশ করা হয়, যেখানে দেখা যায় দ্রুতগতিতে ছুটে চলা একটি ছোট নৌকা হঠাৎ বিমান থেকে হামলার শিকার হয়ে আগুনে পুড়ে যায়।
হেগসেথের দাবি, নিহতরা সবাই ‘নারকো-সন্ত্রাসী’, যারা যুক্তরাষ্ট্রে বিপুল পরিমাণ মাদক পাচারে জড়িত ছিল। তার ভাষায়,
‘নৌযানটি আমেরিকার জনগণকে বিষাক্ত করার ষড়যন্ত্র করছিল। এতে চারজন পুরুষ নারকো-সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। তবে কোনো মার্কিন বাহিনী ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ভেনেজুয়েলার উপকূলের কাছাকাছি এই অভিযান চালানো হয় এবং ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান চলমান থাকবে।
মাদকবিরোধী অভিযানে ধারাবাহিকতা
চলতি অক্টোবর মাসে ক্যারিবীয় অঞ্চলে এটি প্রথম হামলা হলেও, এর আগে সেপ্টেম্বর মাসে পরপর তিনটি অভিযানে ১৭ জন নিহত হয়।
-
২ সেপ্টেম্বরের হামলায় মারা যান ১১ জন,
-
১৫ ও ১৯ সেপ্টেম্বরের অভিযানে আরও ৬ জন নিহত হন।
প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ বিষয়ে তার নিজস্ব প্ল্যাটফর্ম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ মন্তব্য করেছেন,
“নৌকাটিতে এত বিপজ্জনক মাদক ছিল যা দিয়ে ২৫ থেকে ৫০ হাজার মানুষকে মেরে ফেলা সম্ভব।”
আইনি বিতর্ক ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
তবে এসব হামলাকে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন হিসেবে দেখছেন বহু আইন বিশেষজ্ঞ। তাদের মতে, জাতিসংঘ সনদ অনুযায়ী, মাদক পাচারকে “সশস্ত্র হামলা” হিসেবে গণ্য করা যায় না, ফলে এর জবাবে সামরিক আক্রমণ চালানো আইনগতভাবে বৈধ নয়।
এর বিপরীতে, ট্রাম্প প্রশাসন মাদক পাচারকে যুক্তরাষ্ট্রের “জাতীয় নিরাপত্তার বিরুদ্ধে আগ্রাসন” হিসেবে ব্যাখ্যা করছে। হেগসেথের ভাষায়,
“যতদিন এই আক্রমণ চলবে, ততদিন আমরা এ ধরনের প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে থাকব।”